কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

ট্রেন লেট, ট্রেন লেট অ্যাবসেন্ট

দেশ রূপান্তর মামুনুর রশীদ প্রকাশিত: ০৭ জুলাই ২০২২, ১১:১৬

আমাদের একজন শিক্ষক ছিলেন, তিনি খুব মজা করে রোল কল করতেন। ছাত্রদের নাম উচ্চারণের সময় একটা বিশেষ ভঙ্গি প্রয়োগ করতেন। রোল কল শুরু হওয়ার দু-তিন মিনিট পর যে ছাত্ররা ক্লাসে ঢুকত তাদের দিকে তাকিয়ে একটু বিশেষ ভঙ্গিমায় বলতেন, তুমি লেট প্রেজেন্ট। আর যারা দশ মিনিট পরে ঢুকত তাদের দিকে তাকিয়ে বলতেন তুমি প্রেজেন্ট নও, লেট প্রেজেন্টও নও, তুমি লেট অ্যাবসেন্ট। দু-একজন ছাত্র প্রতিবাদ করার চেষ্টা করে বলত, স্যার আমি তো প্রেজেন্ট। স্যার আবারও দৃঢ়ভঙ্গিতে বলতেন, তুমি লেট অ্যাবসেন্ট। দশ মিনিট বিলম্বে যদি ট্রেনকে লেট বলা হয় তাহলে স্যারের ভাষায় ট্রেনটি লেট অ্যাবসেন্ট। এমনি লেট অ্যাবসেন্টের হাজারো আবর্তে পড়ে আছে শতবর্ষের ট্রেন। ব্রিটিশ আমলে এই ট্রেন লেটের জন্য সবাইকে জবাবদিহি করতে হতো। এবং কারণ দর্শানোর জন্য রেল কর্মকর্তাদের হিমশিম খেতে হতো। আমার ওই শিক্ষক হয়তো বেঁচে নেই। তাহলে তার হিসাবে দশ মিনিট পর থেকেই ট্রেনকে আর লেট বলতেন না। বলতেন ট্রেন আসেইনি।


পাকিস্তান আমলে যখন থেকে রেলকে সংকুচিত করার চেষ্টা চলছিল, তখন থেকেই ট্রেনের বিলম্বে আসাকে খুব একটা ধর্তব্যের মধ্যে আনা হয়নি। আর বাংলাদেশ আমলে প্রথমত, ট্রেনকে গুরুত্ব দেওয়া শুরু হয়েছিল। ভারতীয় কিছু ট্রেনবিশেষজ্ঞ এ দেশে এসে নানান রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করেছিলেন। ট্রেনের জন্য একটা সুদিন আসবে বলে আমরা আশাও করেছিলাম। ভারতের ট্রেনব্যবস্থা সাতচল্লিশের পর থেকে দুর্বার হয়ে উঠতে থাকে। সেই ধারাবাহিকতা এখনো অক্ষুণœ আছে। এশিয়ার অন্য দেশগুলোতে বিশেষ করে জাপান ও চীনে ট্রেন একটি প্রধান পরিবহন। সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর যে সামরিক সরকারগুলো আসে তারা ট্রেনব্যবস্থাকে দুর্বল থেকে দুর্বলতর করে বাস, মিনিবাস, মালামাল পরিবহনের জন্য ট্রাক এবং রাস্তাঘাটের উন্নয়নের দিকে মনোনিবেশ করে। নব্বই দশক পর্যন্ত হাইওয়ের প্রতিষ্ঠা হতে থাকে। এরই মধ্যে কতগুলো ট্রেন দ্রুতগামী করা হয়েছে, যার ফলে মাঝারি পাল্লার ও লোকাল ট্রেনগুলো ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মানুষ ট্রেনে চলাচলের অভ্যাস ত্যাগ করে বাসকেই ব্যবহার করতে থাকে। ওই সময় ট্রেন লেট বা ট্রেন দুর্ঘটনা, ট্রেনের রক্ষণাবেক্ষণ স্বাভাবিক কারণেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়।


এরপর শুরু হয় ট্রেনের স্থাপনার ওপর নানান ধরনের জবর-দখল। রেলের জায়গাগুলো অবলীলায় বেদখল হতে থাকে এবং রেলের প্রধান কার্যালয়গুলো সরিয়ে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। রেলকে আঞ্চলিকভাবে বিভক্ত করে আরও দুর্বল ব্যবস্থাপনার দিকে ঠেলে দেওয়া হয়। এর মধ্যে পৃথিবীতে রেলের প্রযুক্তিগত অনেক উন্নতি হয়ে গেছে। বিশেষ করে ট্রেন এখন ডিজেলের ওপর মুখাপেক্ষী নয়। ট্রেন চলে বিদ্যুতের সাহায্যে। রেলকে কম্পিউটার সিস্টেমের আওতায় আনা হয়। কিন্তু বাংলাদেশের রেল সেই সবুজ আর লালবাতি এবং পয়েন্টসম্যানের হাতে হাতে চলতে থাকে। রেল আর তখন লেট নয় একেবারে লেট অ্যাবসেন্টের জায়গায় পৌঁছায়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা যাত্রীদের হয় অপেক্ষায় বসে থাকতে হয় স্টেশনে কিংবা ট্রেনের ভেতর বসে থাকতে হয় প্রচন্ড গরমে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও