ভাড়া খেয়ে বাঁচার চেষ্টা
সেবার মান অনেক আগে থেকেই তলানিতে। ব্যবসা বলতে যা আছে, দিনে দিনে তা-ও লাটে উঠছে। সে দিকে মনোযোগ না দিয়ে এখন পরিকল্পনা করা হচ্ছে ‘ভবনওয়ালা’ হওয়ার। বাড়িওয়ালাদের মতো ভবন ভাড়া দিয়ে আয় বাড়ানোর চিন্তা। আর এই চিন্তা এসেছে সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেড বা বিটিসিএলের কর্তাদের কাছ থেকে।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ের সাতরাস্তায় বিটিসিএলের যে চার একর জায়গা আছে, সেখানে ১৫ লাখ বর্গফুটের তিনটি টাওয়ার নির্মাণ করা হবে। এসব টাওয়ারে থাকবে আইটি, রেস্টুরেন্ট, জিমনেসিয়ামসহ বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের কার্যালয়। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে কত খরচ হবে জানেন? ১ হাজার ৭২ কোটি টাকা।
সরকারি সংস্থাকে কেন ভবন ভাড়া দিয়ে খেতে হবে? আবার এভাবে ভবন ভাড়া দিয়ে আয় করা সরকারি সংস্থার কর্মপরিধির (অ্যালোকেশন অব বিজনেস) সঙ্গে সাংঘর্ষিক কি না? বিটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল মতিনের কাছে এ প্রশ্ন করা হলে তাঁর আমতা-আমতা জবাব...‘না, আমাদের আয় বাড়বে।’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ রকম লোকসানি প্রতিষ্ঠানের জন্য বিশাল ব্যয়ে ভবন করা বিলাসিতা ছাড়া কিছুই না। তা ছাড়া, ভবন ভাড়া দিয়ে আয় করা কোনো সরকারি সংস্থার কাজ নয়। কিন্তু কে শোনে কার কথা। এ জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদনও নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থনীতিবিদ এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘রিয়েল এস্টেট কোম্পানির কাজে বিটিসিএলের নেমে পড়া ঠিক হবে না। তাদের কাজ সেবা দেওয়া, লাভ করা বা বাণিজ্যিক উদ্দেশ্য তাদের থাকবে কেন? তাদের নিজেদের জন্য যদি ভবন দরকার হয়, ততটুকু বানাতে পারে। কিন্তু ভবন বানিয়ে ভাড়া দিয়ে তা থেকে অর্থ উপার্জন করার চিন্তা কোনোভাবেই ঠিক না।’
মন্ত্রণালয়ের সূত্র বলছে, পাঁচ বছর মেয়াদি এ প্রকল্পে ভবন নির্মাণের জন্য পরামর্শক নিয়োগের কাজ চলতি বছরের জুলাই-আগস্টের মধ্যে শেষ হবে। আর ২০২৭ সালের মধ্যে টাওয়ার নির্মাণের কাজ শেষ হয়ে যাবে। এসব টাওয়ারে বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সুইমিংপুল এবং একটি হেলিপ্যাডও থাকবে। সেগুলোও বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করা যাবে।