বাংলাদেশে জঙ্গি দমন ও কিছু কথা
ধর্মীয় উগ্রপন্থি সংগঠনের সদস্যদের প্রচলিত ভাষায় জঙ্গি বলা হয়। পবিত্র ইসলাম ধর্মের বিকৃত ও মনগড়া ব্যাখ্যাকে জঙ্গিরা তাদের Ideology মনে করে। তাদের স্লোগান হলো মানুষকে আল্লাহর আইন তথা পবিত্র কোরআন মোতাবেক চলতে হবে। তাদের মতে, মানুষ সৃষ্ট আইন ও বিচার ব্যবস্থা নাজায়েজ। তারা সশস্ত্র যুদ্ধের মাধ্যমে ইসলামী খেলাফত প্রতিষ্ঠা করে আল্লাহর আইন বাস্তবায়ন করবে। তাদের মতে খেলাফত প্রতিষ্ঠার জন্য জেহাদ করতে হবে।
নিরীহ মানুষ হত্যা করা, মসজিদ, ঈদগাহ, আদালত, অন্যান্য উপাসনালয়ে বোমা মেরে মানুষ হত্যা করে ত্রাস সৃষ্টি করাকে তারা জেহাদ মনে করে। জঙ্গিরা সাধারণত যুবকদের টার্গেট করে তাদের অনুসারী করতে। যুবকদের ধর্মের বিকৃত ও মনগড়া ব্যাখ্যার মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ করে জঙ্গি সংগঠনে নিয়ে যায়। তারা প্রচার করে জেহাদ করতে গিয়ে কেউ মারা গেলে কিংবা আত্মঘাতী হয়ে কেউ মৃত্যুবরণ করলে সে সরাসরি জান্নাতে চলে যাবে। তাকে কেয়ামতের বা হাসরের ময়দানে বিচারের সম্মুখীন হতে হবে না। মানুষকে এভাবে ভুল বুঝিয়ে তারা জঙ্গি সংগঠনে সদস্য সংগ্রহ করে।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য বাংলাদেশ থেকে কিছু সংখ্যক মাদরাসার ছাত্র ও শিক্ষক আফগানিস্তানে যায়। যুদ্ধ শেষে তাদের অনেকেই তালেবানদের কাছ থেকে জঙ্গিবাদের দীক্ষা নিয়ে দেশে ফেরে। দেশে ফিরে তারা জঙ্গি সংগঠন তৈরি করে এবং তাতে সদস্য নিয়োগের কাজ হাতে নেয়। কিছু ইসলামী এনজিও ও ইসলামপন্থি কতিপয় ব্যক্তির কাছ থেকে অর্থ সাহায্য নিয়ে এবং তাদের নিজেদের দেওয়া চাঁদা দিয়ে তারা সংগঠনের তহবিল তৈরি করে। সদস্যদের প্রশিক্ষণ ও অপারেশনের কাজে তহবিল ব্যবহৃত হয়।
মাওলানা আবদুর রহমান, মুফতি হান্নান ও শায়েখ আবদুর রহমান জঙ্গি সংগঠন তৈরি করে। আবদুর রহমান ও আফগানফেরত কতিপয় আলেম ১৯৯২ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে গঠন করে হরকাতুল জেহাদ বাংলাদেশ সংক্ষেপে হুজিবি। পরে মুফতি হান্নান হুজিবিতে যোগদান করেন এবং হুজির অন্যতম নেতা হয়ে ওঠেন। হুজিবির নাম হয় হরকাতুল জিহাদ (হুজি)। শায়েখ আবদুর রহমান জমিয়তে ওলামা বাংলাদেশের (জেএমবি) শীর্ষ নেতা ছিলেন। বাংলাভাই শায়েখ আবদুর রহমানের দোসর ছিলেন।
- ট্যাগ:
- মতামত
- জঙ্গি দমন অভিযান
- বাংলাদেশ পুলিশ