শিক্ষক লাঞ্ছনা এবং লজ্জাহীনতা

সমকাল ড. নাদির জুনাইদ প্রকাশিত: ০৩ জুলাই ২০২২, ০৯:৫১

গ ত ১৮ জুন নড়াইলে একটি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসের গলায় যখন জুতার মালা পরানো হয়; জানা যায়, সে সময় কলেজ ক্যাম্পাসে উপস্থিত ছিলেন নড়াইলের জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপার। সেখানে ছিল দুই শতাধিক পুলিশ সদস্য। তাদের সামনেই কলেজের তিনজন হিন্দু ধর্মাবলম্বী শিক্ষকের মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। আর জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার ক্যাম্পাসে থাকার সময়েই হ্যান্ডমাইকে ঘোষণা দিয়ে কলেজ অধ্যক্ষের গলায় জুতার মালা ঝুলিয়ে দেয় সে কলেজের কিছু ছাত্র আর স্থানীয় কতিপয় ব্যক্তি। অধ্যক্ষের গলায় যখন জুতার মালা ঝোলানো হচ্ছিল, তখন পাশেই দাঁড়িয়ে ছিল পুলিশ সদস্যরা। কিন্তু একজন শিক্ষককে কুৎসিতভাবে হেনস্তা করার সেই ঘৃণ্য কাজে বাধা দেয়নি কেউ। এর ক'দিন পরই সাভারের আশুলিয়ায় এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দশম শ্রেণির এক ছাত্র ক্রিকেট খেলার স্টাম্প দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে। বেধড়ক আঘাতে গুরুতর আহত হন শিক্ষক উৎপল। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুই দিন পর মারা যান তিনি। জানা গেছে, ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি উৎপল সরকার ক'দিন আগে সেই ছাত্রকে একজন ছাত্রীর সঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অযাচিতভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখে নিষেধ করেছিলেন। এ কারণেই ক্ষুব্ধ হয়ে সেই ছাত্রীর সামনে 'হিরোইজম' দেখাতে শিক্ষকের ওপর হামলা করে ছাত্রটি।


কয়েক দিনের ব্যবধানে শিক্ষক লাঞ্ছনা এবং শিক্ষক হত্যার এ দুটি ঘটনার পর সচেতন নাগরিকরা দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ করছেন। কিন্তু এই প্রতিবাদ তো করছেন অল্পসংখ্যক সচেতন নাগরিক। শিক্ষকদের হেনস্তা এবং হত্যা করা যে সমাজের মাথা হেঁট হয়ে যাওয়াই নির্দেশ করে; তৈরি করে সমাজের জন্য তীব্র এক গ্লানি- তা অনুধাবনের বোধ এবং সচেতনতা কি আমাদের বর্তমান সমাজে বহু মানুষের মধ্যে আছে? এখানে শিক্ষকদের অপমান আর নিগ্রহের ঘটনা তো নতুন নয়। কয়েক মাস আগেই বিজ্ঞানের শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলকে জেলে যেতে হয়েছিল। কয়েক বছর আগে নারায়ণগঞ্জের একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে সবার সামনে কান ধরে ওঠবস করিয়েছিলেন একজন সংসদ সদস্য। সেই ঘটনাগুলোর পরও সমাজের সচেতন মানুষ প্রতিবাদ করেছিলেন। কিন্তু সেই প্রতিবাদে কি প্রভাবিত হয়েছিল দেশের বহু মানুষ? শিক্ষকদের মর্যাদা এই সমাজে অনেক মানুষ অনুধাবন করতে পারছে না। এমন অশুভ আর বিপজ্জনক পরিস্থিতি দেখে রাষ্ট্র কি উদ্বিগ্ন? মানুষকে আলোকিত করার কাজে যাঁরা যুক্ত, তাঁদের অপমান, আঘাত করা যখন সহজ হয়ে যায়; তাঁদের অমর্যাদা করা হয়ে পড়ে মামুলি ব্যাপার, তখন স্পষ্ট হয়- জ্ঞানের আলো আর মননশীলতা সেই সমাজে গুরুত্বপূর্ণ নয়। সেখানে প্রাধান্য পাচ্ছে ক্ষমতার কদর্য দাপট দেখানোর রুচিহীন প্রবণতা।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও