ইভিএম : আলোচনা আশঙ্কা আর অভিজ্ঞতা
নির্বাচন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার অঙ্গ এ কথা যেমন ঠিক, তেমনি নির্বাচন হলেই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয় না সে কথা আরও বেশি সঠিক। দেশ-বিদেশের কথা বাদ দিয়ে শুধু বাংলাদেশের বিগত নির্বাচনগুলোর দিকে লক্ষ রাখলে এ কথা প্রমাণ করতে কারও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সামনে দাঁড়িয়ে বিগত এগারোটি নির্বাচনকে যদি পর্যালোচনা করা হয় তাহলে ১৯৯১, ১৯৯৬-এর জুন, ২০০১ এবং ২০০৮ এই চারটি নির্বাচন ছাড়া বাকি সবগুলোই বিতর্কিত নির্বাচন বলা যায়। যে চারটি নির্বাচন তালিকা থেকে বাদ দেওয়া যায় তারাও বিতর্কের ঊর্ধ্বে নয় বরং সঠিকভাবে বলা যায় কম বিতর্কিত বা তুলনামূলক গ্রহণযোগ্য হয়েছিল এই নির্বাচনগুলো। এবং উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো এই নির্বাচনগুলোর কোনোটিই দলীয় সরকারের অধীনে হয়নি।
নির্বাচন সামনে রেখে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) কারিগরি ও ভোটদান বিষয়ে মতবিনিময় করার জন্য ৩৯টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। ইভিএম-সংক্রান্ত অবিশ্বাস, অনাস্থা দূর করা এবং এর কারিগরি দিক অবহিত করার প্রচেষ্টা ছিল এই মতবিনিময় সভার উদ্দেশ্য। তিন দফায় অনুষ্ঠিত এই মতবিনিময় সভায় ৪টি দল ইভিএমের পক্ষে মতামত দিয়েছে, ২৪টি রাজনৈতিক দল ইভিএম নিয়ে তাদের সংশয় ব্যক্ত করে একে অগ্রহণযোগ্য বলে মত দিয়েছে আর ১১টি রাজনৈতিক দল অংশ নেয়নি। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মতবিনিময় সভার শেষে সাংবাদিকদের বলেছেন, তারা ইভিএম মন থেকে চান, চেতনা থেকে চান। কিন্তু তার এ কথা বাকিদের মনের সংশয় আর অভিজ্ঞতাজনিত ভয় দূর করতে পারেনি। বরং ক্ষমতাসীনদের জোরের সঙ্গে ইভিএম দাবি করায় অনেকের সন্দেহ ঘনীভূত হয়েছে।