পদ্মা সেতু আত্মপ্রত্যয় ও আত্মমর্যাদার প্রতীক

দেশ রূপান্তর বদরুল হাসান প্রকাশিত: ২৭ জুন ২০২২, ১৩:২৬

অবশেষে স্বপ্ন সত্যি হয়েছে; পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হয়েছে। অনেক মানুষ হয়ে পড়েছে আবেগাপ্লুত। পত্রিকায় দেখলাম নারায়ণগঞ্জে এক দম্পতি এক সঙ্গে তিন সন্তানের আশীর্বাদপ্রাপ্ত হয়েছেন; একজন ছেলে, দুইজন কন্যা। দম্পতি ছেলের নাম রেখেছেন স্বপ্ন, আর কন্যা দুইজনের নাম রেখেছে পদ্মা ও সেতু। মনে পড়ে উপসাগরীয় যুদ্ধের সময় এদেশে জন্মলাভ করা অনেক ছেলের নাম রাখা হয়েছিল সাদ্দাম হোসেন। নানা কারণে সাদ্দাম হোসেন তখন হয়ে উঠেছিলেন এদেশের অনেক মানুষের স্বপ্নের নায়ক। সন্তানের নামকরণ ছিল তাদের স্বপ্নের নায়কের আবেগময় রূপায়ণ; তাই তখন শুরু হয়েছিল স্বপ্নের হিরোকে আপন করার অদম্য জাগরণ। সাধারণত আবেগ মানুষকে হিতাহিত জ্ঞানশূন্য করে ফেলে। কিন্তু সেই আবেগে যদি দেশপ্রেম এবং অঙ্গীকারের নিষ্ঠা থাকে, তা হলে সেই আবেগ দেশ ও সমাজকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যেতে প্রেরণা জোগায়। এই আবেগের তাড়নায় সৈনিক জীবন বাজি রেখে দেশের জন্য যুদ্ধ করে, মাঠ-ময়দানের কর্মীরা লোভ লালসার ঊর্ধ্বে উঠে ব্যক্তিগত স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে দেশ ও সমাজের কাজে আনন্দ লাভ করেন। পদ্মা সেতুর সফল বাস্তবায়ন যেন আমাদের সামনে সেইরূপ সীমাহীন গর্ব ও অনাবিল আনন্দের মাহেন্দ্রক্ষণ হাজির করেছে।    


এক্ষণে মানুষের গর্বিত ও আবেগপ্রবণ হওয়ার যথার্থ কারণ রয়েছে। প্রথমটা হলো অন্যায্য শাপমোচন। এই সেতু গড়তে ঋণ দেওয়ার নামে বিশ্বব্যাংক দেশবাসীর ললাটে যে মিথ্যা কালিমা লেপন করার অপচেষ্টা চালায় তা আজ বিশ্ববাসীর কাছে উন্মোচিত। এই ব্রিটন উডস ইনস্টিটিউশনের দুর্নীতির ভিত্তিহীন অভিযোগে দেশের একজন মন্ত্রী তার মন্ত্রিত্ব হারান। আর একজন সচিব জেলের ঘানি টানেন। মোশাররফ হোসেন ভুঁইয়া নামের ছোটখাটো এই সচিব মানুষটাকে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি। খাদ্য অধিদপ্তরে প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করা কালে তার সঙ্গে অনেক কাজ করার সুযোগ আমার হয়েছে। তার মতো আপাদমস্তক সৎ ও সদালাপী মানুষের বিচারের সম্মুখীন হওয়া ছিল যেন সতী সীতার সতীত্বের অগ্নিপরীক্ষা। শাপমোচনের পর প্রধানমন্ত্রী তাকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করেছেন বটে, কিন্তু তার দুঃস্বপ্নের স্মৃতি তো আর কেউ মুছে ফেলতে পারবেন না। তিনি শুধু একজন মোশাররফ হোসেন ভুঁইয়া ছিলেন না, ছিলেন সব বাঙালির প্রতিভূ।


দ্বিতীয় কারণটি আরও গুরুত্বপূর্ণ। আর সেটা হলো জাতি হিসেবে বাঙালির আত্মমর্যাদাবোধের উন্মেষ। বাঙালির কতটুকু উন্নতি হয়েছে এবং তার সক্ষমতা কতটুকু, সে সম্পর্কে উন্নয়ন সহযোগীসহ দেশের নীতিনির্ধারণী মহলের অনেকেরই কোনো ধারণা ছিল না। প্রাক্তন সচিব জনাব মোশাররফ হোসেন ভুঁইয়ার ভাষ্যে জানা যায়, ২০১২ সালের মাঝামাঝি বিশ্বব্যাংক ঋণচুক্তি বাতিল করার পর দেশের কতিপয় বুদ্ধিজীবী ও অর্থনীতিবিদ অভিমত ব্যক্ত করেন যে, উন্নয়ন সহযোগীদের অর্থায়ন ছাড়া পদ্মা সেতুর মতো মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর সম্ভব নয়। এসময় মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বিশ্বব্যাংকের ঋণ সহায়তা ছাড়াই পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু তৎকালীন অর্থমন্ত্রী মিডিয়া ও কতিপয় সিভিল সোসাইটি সদস্যের মতামতে উদ্বুদ্ধ হয়ে বিশ্বব্যাংককে পুনরায় এ প্রকল্পে ফিরিয়ে আনার পক্ষে অবস্থান নেন। তিনি কতিপয় নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের মন্ত্রীকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। এই সময় বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে দেনদরবার করে তাদের প্রকল্পে ফিরিয়ে আনতে অর্থমন্ত্রীর প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী অনিচ্ছা সত্ত্বেও রাজি হন। কিন্তু এর পরও একের পর এক কঠিন শর্ত আরোপ করা শুরু হয়। এই প্রেক্ষাপটে ২০১৩ সালে প্রধানমন্ত্রী জানুয়ারিতে বিশ্বব্যাংকের ঋণ প্রত্যাখ্যান করে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেন; শুরু করেন নিজস্ব অর্থায়ন ও ব্যবস্থাপনায় স্বপ্নের এই সেতুর বাস্তবায়ন। 

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও