কুসিকের চেয়ে ভালো নির্বাচন আর সম্ভব কি?
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে কু-এ ধরেছিল। ২০১২ এবং ২০১৭ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী পরাজিত হওয়ায় কেউ কেউ মনে করছিলেন, অভ্যন্তরীণ কোন্দল দূর না হলে আওয়ামী লীগের পক্ষে কুমিল্লা সিটিতে জয় পাওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু গত ১৫ জুন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত জয়লাভ করেছেন। প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে কি আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ বিরোধ মিটে গেছে?
কুমিল্লার রাজনীতি সম্পর্কে যারা খোঁজখবর রাখেন তারা বলছেন, না, কুমিল্লায় আওয়ামী লীগ এখনো স্পষ্ট দুই ভাগে বিভক্ত। একভাগের নেতৃত্ব দেন আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার, তিনি সদর আসনের সংসদ সদস্য এবং বলা হয় কুমিল্লা নাকি চলে তার নির্দেশে। তার প্রতিপক্ষ আফজল খান। তিনি আর জীবিত নেই, তার হয়ে লড়ছেন নারী সংসদ সদস্য ও আফজল খানের মেয়ে আঞ্জুম সুলতানা সীমা। সীমা আগের বার সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে প্রার্থী হয়ে পরাজিত হয়েছিলেন। বিরোধ মীমাংসা না হলেও এবার আওয়ামী লীগ তাহলে জিতলো কী করে? এই প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে, আওয়ামী লীগের বিরোধ কাটাকাটি হয়েছে বিএনপির কোন্দলে।
তার মানে, রাজনৈতিক দলগুলোর ভেতরের বিরোধ প্রকাশ্য রাজনীতির ক্ষেত্রে প্রভাব রাখছে। একদলের বিরোধ আরেক দলের জন্য সুবিধা এনে দিচ্ছে। আওয়ামী লীগের বিরোধ সুযোগ করে দেয় বিএনপিকে আবার বিএনপির বিরোধ সুবিধা করে দেয় আওয়ামী লীগের। যেমন- আগের দুই নির্বাচনে বাহার-আফজল বিরোধের ফাঁকে জয় পেয়েছেন বিএনপির মনিরুল হক সাক্কু। এবার বিএনপির বিরোধের জন্য জয় পেলেন আওয়ামী লীগের রিফাত। এজন্যই কি আমাদের দেশে বড় দুটি দলের অভ্যন্তরীণ গোলমাল না মিটিয়ে জিইয়ে রাখা হয়? এমনটা হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। তবে বিষয়টি নিয়ে রাজনীতিবিষয়ক কোনো গবেষক গভীরে গিয়ে অনুসন্ধান করতে পারেন।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে এবার নানা কারণে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হয়েছিল। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সরকারি দল আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা কমছে না বাড়ছে সেটা দেখার আগ্রহ ছিল। দেখার আগ্রহ ছিল নতুন নির্বাচন কমিশনের সক্ষমতা।