সীতাকুণ্ডের ভয়াবহতার মধ্যেও দেখা যায় মানবিক বাংলাদেশ
‘এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি/ সকল দেশের রানি সে যে আমার জন্মভূমি।’ কবি দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের এই গানটি আমাদের শিহরিত করে, শিরায় অনুরণন তোলে এবং আবেগে জড়িয়ে পড়ে অধিরতা। গত ৪ জুন চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নের বি এম কন্টেইনার ডিপোতে আগুন লাগা ও বিস্ফোরণ পরবর্তী ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এমনই এক মানবিক বাংলাদেশকে প্রত্যক্ষ করেছে বাংলাদেশসহ গোটা বিশ্ব।
সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া সবচেয়ে বড় দুর্যোগ এবং অগ্নিকাণ্ড ছিল সীতাকুণ্ড অগ্নিকাণ্ড। সাভারের রানা প্লাজা ধসের পর এত বড় দুর্যোগ বাংলাদেশে ঘটেনি। আমরা দেখেছি কীভাবে সাধারণ মানুষ ডিপোতে আটকে পড়া কর্মীদের বাঁচানোর জন্য নিজেদের প্রাণ উৎসর্গ করেছেন। কীভাবে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা নিজেদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে ফেলে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেছেন। আগুন নেভানোর প্রচেষ্টায় বেশ কয়েকজন ফায়ার সার্ভিস কর্মীর মৃত্যু হয়েছে, যা সচরাচর দেখা যায় না। এই কর্মীদের আত্মত্যাগের ঘটনা জাতি সারা জীবন শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে।
প্রথম দিকে ডিপোতে আগুন লাগার পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করার সময় কেমিক্যাল ভর্তি একটি কন্টেইনার বিস্ফোরিত হওয়ার ফলে সেখানে অবস্থানরত অনেকেই মারা যান। এ পর্যন্ত সেই ঘটনায় প্রায় ৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। কন্টেইনার ডিপোতে যখন আগুন লাগে, ঠিক সেই সময় গেটে তালা দিয়ে ডিপোর কর্মচারীরা পালিয়ে গেলে অনেক কর্মী ভেতরে আটকে পড়ে। তখন সাধারণ মানুষ গেট ভেঙে তাদের উদ্ধারের চেষ্টা করে। ইতোমধ্যে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সেখানে উপস্থিত হয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করার সময় একটি কন্টেইনার বিস্ফোরিত হয় এবং সেখানে অনেকেই নিহত হন।