বৃষ্টির পরিমাণ ও বন্যার ধরনের ২ রেকর্ড ভাঙছে
সিলেট ও সুনামগঞ্জের ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি নজিরবিহীন বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) বন্যা ও পানি ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম। দীর্ঘকাল ধরে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে গবেষণা করছেন তিনি। শুক্রবার সমকালের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘অতীতে দেশে যত বন্যা হয়েছে এবারের সিলেট ও সুনামগঞ্জের বন্যার সঙ্গে তার মৌলিক দু'টি পার্থক্য আছে। উজান আর ভাটিতে কখনও দুই দিনের এতো পরিমাণ বৃষ্টির নজির নেই। শুধু মেঘালয়ে বৃহস্পতিবার ৯৭২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। একই দিন সুনামগঞ্জে বৃষ্টি হয়েছে ৩৭৫ মিলিমিটার। আর গত তিন দিনে ভারতের উজানে আসাম আর মেঘালয় মিলিয়ে আড়াই হাজার মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। এটা ১২২ বছরের মধ্যে একটা নতুন রেকর্ড। এত অল্প সময় এতো অধিক বৃষ্টি অতীতে দেখা যায়নি। এটা বৈশ্বিক অস্থির আবহাওয়ার ফল। আগামী কয়েকদিনে বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হতে পারে। আবহাওয়ার এমন নতুন আচরণের কারণে আগামীতে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারেও আমাদের নতুনভাবে ভাবতে হবে।’
সাইফুল বলেন, ‘আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হচ্ছে- আগামী এক-দুই দিনের মধ্যে আরেকটি রেকর্ড হতে যাচ্ছে। এতদিন সুরমা নদীর সুনামগঞ্জ পয়েন্টে সর্বোচ্চ পানির লেভেল ছিল ৯.২৯ মিটার। শুক্রবার ওই পয়েন্টে পানির লেভেল ছিল ৮.৮৫ মিটার। সুরমার পানির লেভেলের রেকর্ড ভেঙে যাচ্ছে। কারণ আগামী ২-৩ দিন উজান-ভাটিতে প্রচুর বৃষ্টি হবে।’
তিনি বলেন, ‘উজানের পানি ভাটি হয়ে নামে। এমনিতে মে মাসে সিলেট অঞ্চলে একটি বড় বন্যা হয়ে গেছে। নদ-নদী পানিতে এখনও ভরা। অল্প সময়ের দ্বিতীয় বন্যা ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। সাধারণত মেঘালয় থেকে পানি সুনামগঞ্জের সুরমা কুশিয়ারা হয়ে মেঘনায় পড়ে। এরপর মেঘনা থেকে বঙ্গোপসাগরে যায়। সিলেটের পাহাড়ি এলাকা দ্রুত নগরায়ন হচ্ছে। নদ-নদীতে আগের চেয়ে বেশি পলি পড়ছে। অন্যান্য জলাদারও কমছে। এই বৃষ্টির পানি ধরে রাখার জায়গাও আগের চেয়ে কম। এতে দ্রুত পানিতে বিস্তৃত হচ্ছে এলাকা।’