
শান্তিকামী মানুষ চায় বলয়মুক্ত বিশ্ব
নতুন পর্যায়ে স্নায়ুযুদ্ধের তৎপরতায় যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বব্যাপী তার অধীনে একটি ‘একক ক্ষমতার বলয়’ বা ‘ইউনিপোলার পাওয়ার ব্লক’ তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় এরই মধ্যে গঠিত হয়েছে কোয়াড ও অকাস। অকাসের কথা বাদ দিলেও ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্রের কোয়াড গঠনের উদ্যোগ এখনো এর আগে সৃষ্ট চার জাতির মধ্যেই সীমিত রয়েছে। বাংলাদেশসহ এ অঞ্চলের অন্যরা বিভিন্ন কৌশলগত কারণে এতে এখনো অংশীদার হওয়ার আগ্রহ নিয়ে আগে বাড়েনি।
এতে থেমে নেই বিশ্বের অন্যতম প্রধান পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র। তারা এরই মধ্যে এ অঞ্চলে একটি ইন্দো-প্যাসিফিক অর্থনৈতিক উদ্যোগ গঠনে অত্যন্ত তৎপর হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে অস্ট্রেলিয়া, ভারত, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, নিউজিল্যান্ডসহ মোট ১৩টি দেশ এতে যোগদানের আগ্রহ দেখিয়েছে। বলা হয়েছে, এ উদ্যোগ উল্লিখিত দেশগুলোর মধ্যে অবাধ ও মুক্ত বাণিজ্যকে ত্বরান্বিত করে এ অঞ্চলের উন্নয়নের ধারাকে টেকসই ও অব্যাহত রাখতে সক্ষম হবে।
আমাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যের (রপ্তানি) পরিমাণ চীনের তুলনায় অনেকটা উল্লেখযোগ্য হলেও বাংলাদেশ এখনো তাতে যোগদানের সিদ্ধান্ত নেয়নি। বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রেও একটি কৌশলগত অবস্থান নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করছে। এতে সহজেই একটি বিষয় অনুমিত হয় যে বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে কতটা চাপের মুখে রয়েছে। একদিকে ইন্দো-প্যাসিফিক নিরাপত্তাবলয় এবং অন্যদিকে অর্থনৈতিক উদ্যোগের সীমাহীন তৎপরতায় ক্রমেই বদলে যাচ্ছে এ অঞ্চলের আর্থ-রাজনৈতিক দৃশ্যপট। এ অবস্থায় বিশ্ব বাণিজ্যের ক্ষেত্রে শীর্ষ স্থানে অবস্থানকারী চীনও তার ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভসহ (বিআরআই) বিশাল পরিকল্পনা নিয়ে নতুনভাবে প্রতিযোগিতায় নামছে। পাশাপাশি চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং বিশ্বব্যাপী সামরিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তাঁর বৈশ্বিক নিরাপত্তা উদ্যোগ (ষেড়নধষ ঝবপঁত্রঃু ওহরঃরধঃরাব) নিয়ে মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, যা এর আগে তেমনভাবে কখনো দেখা যায়নি। চীনের নেতৃত্বে রাশিয়া, ইরান, ভেনিজুয়েলা, উত্তর কোরিয়া, পাকিস্তানসহ আরো অনেকে এখন সে উদ্যোগের দিকে তাকিয়ে রয়েছে।
- ট্যাগ:
- মতামত
- শান্তি প্রতিষ্ঠা
- স্নায়ুযুদ্ধ