অবসাদের চোরাবালিতে তরুণ সমাজ
ডিপ্রেশন যে একজন মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যকে তছনছ করে দেয় এটা তো আমরা সবাই জানি, কিন্তু এটা যে চোরাবালির মতো রূপ নিয়ে কাউকে পুরোপুরি অসহায় করে দিয়ে তাকে নিয়তির মতো মৃত্যুর অন্ধকূপে টেনে নিতে পারে, এভাবে কখনও ভেবে দেখিনি। গত ১২ মে দৈনিক সমকালে প্রকাশিত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী সাদিয়া তাবাসসুমের ভয়ংকর সুইসাইড নোটটি পড়ে আমার বোধোদয় হলো যে এ রকম হতে পারে, এ রকম হচ্ছে- 'চোরাবালির মতো ডিপ্রেশন বেড়েই যাচ্ছে, মুক্তির পথ নেই, গ্রাস করে নিচ্ছে জীবন, মেনে নিতে পারছি না।'
এই সংবাদটি প্রকাশিত হওয়ার পরের দিন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল নোমান সমকালেই তাঁর শঙ্কা প্রকাশ করেন এবং সবাইকে এ সমস্যা সমাধানের জন্য দ্রুত এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
তিনি তথ্য-উপাত্ত দিয়ে আমাদের বোঝানোর চেষ্টা করেছেন যে এটা সাদিয়ার একার সমস্যা নয়। তাঁর লেখাতেই আমরা জানতে পারি, একেবারে সাম্প্রতিক সময়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র ছাদ থেকে লাফ দিয়ে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী বিষপান করে, অনার্স পাস করা এক শিক্ষার্থী ই-কমার্সে ১২ লাখ টাকা হারিয়ে এবং আরও একজন বিষণ্ণতায় ভুগে এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ডিপ্রেশনের কারণে আত্মহত্যা করেন। আঁচল ফাউন্ডেশন নামে এক বেসরকারি সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, শুধু ২০২১ সালে দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ৫০ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন। আত্মহত্যা করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন এমন শিক্ষার্থীও আছেন।