সুপার হিরোদের জন্য ভালোবাসা
বাংলাদেশের সেবা খাত সম্পর্কে সাধারণ মানুষের ধারণা বরাবরই নেতিবাচক। সেবা সম্পর্কে কোনও ধারণাই নেই সেবা খাতের মানুষের। বাংলাদেশে সেবা মানেই ভোগান্তি, সেবা মানেই হয়রানি, সেবা মানেই ঘুস। পাসপোর্ট অফিসে যান, দফায় দফায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে। একই অবস্থা এনআইডি সেবা, জন্মনিবন্ধন, জমি নিবন্ধন পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস, ব্যাংক- সর্বত্র। যেখানেই সেবা, সেখানেই উপচেপড়া ভিড়, সেখানেই দুর্নীতি। বিপদে পড়লে মানুষের থানা বা হাসপাতালে ছুটে যাওয়ার কথা। কিন্তু মানুষ যেতে চায় না। সরকারি হাসপাতালে গেলে দালালের খপ্পরে পড়ার ভয়, বেসরকারি হাসপাতালে গেলে পকেট কাটার ঝুঁকি। থানায় পয়সা ছাড়া নাকি একটা জিডিও করা যায় না। এ তো গেলো সরকারি খাতের কথা। বেসরকারি খাতের অবস্থাও সরকারি খাতের সমান্তরালই। বেসরকারি টেলিফোন কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্ত নেই। কিন্তু সেই অভিযোগ করার জায়গাও নেই। সরকারি খাতের অব্যবস্থাপনা নিয়ে তবু গণমাধ্যমে মাঝে মধ্যে লেখা হয়। কিন্তু বেসরকারি খাত নিয়ে লেখাও হয় না খুব একটা। বিজ্ঞাপন দিয়ে গণমাধ্যমগুলো কিনে রাখে বেসরকারি সেবা খাতের ডাকাতেরা।
সরকারি-বেসরকারি খাতে সীমাহীন অব্যবস্থাপনার মধ্যেও দুটি উজ্জ্বল ব্যতিক্রম আছে। একটি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, অপরটি পুলিশের ৯৯৯ সার্ভিস। ৯৯৯ নিয়ে আরেক দিন কথা বলবো। আজ বলি ফায়ার ফাইটারদের কথা। আমরা বুঝে না বুঝে ফায়ার সার্ভিসের বিরুদ্ধেও অনেক কথা বলি। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলেই আমরা লিখি, আগুন লাগার এতক্ষণ পর ফায়ার সার্ভিস এসেছে। তবে মন থেকে বলছি, এই একটি সেবা খাতের ব্যাপারে আমার মনে কোনও বিদ্বেষ নেই, আছে শুধু হৃদয়ভরা ভালোবাসা। আমাদের গ্রামের বাড়ির এক চাচাতো বোনের স্বামী ফায়ার সার্ভিসে চাকরি করতেন। ছেলেবেলায় তার কাছ থেকে ফায়ার ফাইটারদের গল্প শুনতাম। সেই থেকে ফায়ার ফাইটারদের সম্পর্কে আমার মনে সুপার হিরোর অবয়ব আঁকা হয়ে গেছে। দিনে দিনে সেই ছবি আরও স্পষ্ট হয়েছে, কখনোই ম্লান হয়নি।