অবসর জীবনের বিড়ম্বনা
উপনীত হয়। প্রথমে প্রস্তুতিকাল লেখাপড়া, ডিগ্রি, প্রশিক্ষণ ইত্যাদি। পরে কর্মকাল চাকরি, ব্যবসা-বাণিজ্য, পেশাগত দিক ইত্যাদি। সবশেষে অবসর জীবন, তবে শেষাংশের জন্য পশ্চিমা দুনিয়ার মানুষ দীর্ঘ প্রস্তুতি নেয়। তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন- কোথায়, কীভাবে, কার সান্নিধ্যে থেকে নিজের জীবনাবসান-পূর্ববর্তী চিরায়ত মুহূর্তগুলো উপভোগ করবেন বা আনন্দ-বেদনার সঙ্গী হয়ে এ পৃথিবীর অমোঘ বাঁধন ছিন্ন করবেন। জীবদ্দশায় এটাই তাঁদের কাছে অন্যতম প্রধান সিদ্ধান্ত বলে মনে করেন। আমাদের মতো দেশে, বর্তমান সমাজ-বাস্তবতায় এমনভাবে বাঁচার কথা ভাবা এখনও প্রায় অসম্ভব। এখানে মনে হয়, এর সব দ্বার রুদ্ধ হয়ে আছে।
মৃত্যু সবকিছুকে দ্রুত বিলীন করে দেয়, তা যেমন ধ্রুব সত্য, তেমনি কোনো কোনো কর্মচারীর অবসর জীবন যেন তাঁকে মৃত্যুর চেয়েও নিঃসঙ্গ করে তোলে। তাঁর থাকা, না থাকাকেও হার মানায়। এখানে জীবনভর ক্ষমতার সঙ্গে বসবাস না করতে পারা অপরাধের শামিল। ক্ষমতাহীনের কাছ থেকে তাঁর চিরচেনা চারপাশ দ্রুততার সঙ্গে সরে পড়ে, দূরে চলে যায়। এটা যেন অলিখিত নিয়ম বা বিধিলিপিতে পরিণত হয়ে আছে। এখানে চেয়ারে যিনি সাময়িক উপবিষ্ট তাঁর ব্যস্ততার শেষ নেই। তবে তা যে সামাজিক সম্পর্কের চেয়ে অধিকতর ক্ষণস্থায়ী, তা অনেকেই অনুধাবন করতে পারেন না।
- ট্যাগ:
- মতামত
- অবসর
- জীবনযাপন
- সঠিক জীবনযাপন
- অবসরপ্রাপ্ত