বিস্ফোরণ কিংবা কাঠামোগত হত্যাকাণ্ড
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোর আগুন আবারও প্রমাণ করল- এ দেশে সবকিছুর মূল্য থাকলেও মানুষের জীবনের কোনো মূল্য নেই। রোববার সমকাল অনলাইনের খবরে বলা হয়েছে, দুপুর সোয়া ২টা পর্যন্ত ওই ডিপোর আগুনে ৪৫ জন মারা গেছেন; আহত হয়েছেন অন্তত ২০০ জন, যাঁদের অনেকেরই শরীরের ৬০-৮০ শতাংশ পুড়ে গেছে। অর্থাৎ সময় যত গড়াবে, এ মৃত্যুর মিছিল আরও দীর্ঘ হবে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের যেসব সদস্য সেখানে আগুন নেভাতে গেছেন, তাঁদের বরাত দিয়ে সব সংবাদমাধ্যমেই বলা হয়েছে, আমদানি-রপ্তানি কাজে ব্যবহূত বেসরকারি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত ওই ডিপোতে হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড-ভর্তি কয়েকটি কনটেইনার ছিল। হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড এমন একটা রাসায়নিক পদার্থ, যা আগুনের সংস্পর্শে এক ধরনের বিস্ম্ফোরক হয়ে যায়।
এ রাসায়নিকের কারণেই আগুন দ্রুত চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে; অগ্নিনির্বাপকরা শনিবার রাত ৯টায় আগুন লাগার পর থেকে অব্যাহতভাবে চেষ্টা চালিয়ে রোববার দুপুর ২টায়ও তা পুরোপুরি নেভাতে সফল হননি। ওই ডিপোর মালিকদের কাছে যদি মানুষের জীবনের মূল্য থাকত, তাহলে সেখানে তাঁরা ওই ভয়াবহ 'বিস্ম্ফোরক'ভর্তি কনটেইনার কোনোরকম নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছাড়াই রাখতেন না। আর সরকারও যদি মনে করত, নাগরিকদের জীবনের মূল্য আছে; তাহলে তার যে কর্মকর্তাদের বিষয়টি তদারকি করার কথা, তাঁরা ওই বিপজ্জনক কনটেইনারগুলো সেখানে রাখতে দিতেন না।