কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

একটি লেবু, সাবান, ভ্যাসলিন ও ইভিএমের গল্প

ডেইলি স্টার মোহাম্মদ আল-মাসুম মোল্লা প্রকাশিত: ৩১ মে ২০২২, ২২:৩০

এ বছরের জানুয়ারিতে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (এনসিসি) নির্বাচনে বেশিরভাগ ভোটকেন্দ্রে ভোটের জন্য আদর্শ পরিবেশ দেখা যায়। ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য লম্বা লাইন দিয়ে অপেক্ষা করেন। পোলিং এজেন্ট, কর্মকর্তা ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা নিয়ম অনুযায়ী নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করেছেন। তবে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে একটি আয়োজন ছিল, যা সাধারণত দেখা যায় না--হাত ধোয়ার ব্যবস্থা। প্রথম দেখায় মনে হতে পারে এটি করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে নেওয়া স্বাস্থ্য-নিরাপত্তা ব্যবস্থা। কিন্তু কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলে দেখা যায়, মানুষ শুধু তাদের বুড়ো আঙুল ধুচ্ছেন। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) নিজের পরিচয় যাচাই করতে এই আঙুলের প্রয়োজন পড়ে।


নারায়ণগঞ্জে দেখা গেল, ইভিএম অনেক মানুষের আঙুলের ছাপ পড়তে পারছে না, বিশেষ করে একটু বয়স্ক ভোটারদেরটা। যখনই এ ধরনের ঘটনা ঘটছিল, তখনই তারা তাদের বুড়ো আঙুলে পেট্রোলিয়াম জেলি মাখছিলেন। পোলিং কর্মকর্তাদের টেবিলেও ভ্যাসেলিনের কৌটা রাখা ছিল। কেউ কেউ লোশন বা ফালি করে কাটা লেবুর টুকরাও ব্যবহার করছিলেন।


ইভিএম এ আঙুলের ছাপ না মেলার কারণে নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে ভোটগ্রহণের গতি কমে যায়। মেশিন ভোটারদের পরিচয় যাচাই করতে না পারায় অনেকে ভোটই দিতে পারেননি। এছাড়াও, এ প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানা না থাকায় অনেক ভোটার বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন। অনেকে দীর্ঘ সময় ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার কারণে হতাশা প্রকাশ করেন। তবে তরুণ-তরুণীদের ক্ষেত্রে দেখা গেছে বিপরীত চিত্র। অপেক্ষাকৃত কম সময়ে তারা ভোট দিতে পেরেছেন।


ইভিএমের সমস্যা বাদ দিলে, নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচন ছিল অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ। তবে মাত্র ৫ লাখ ভোটারের নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইভিএম বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। আমি দেখেছি কীভাবে নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। যদি ১২ কোটি ভোটারের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে, ৩০০ আসনে ইভিএম ব্যবহার করা হয় তাহলে কী হতে পারে? আমি এ বিষয়টি নিয়ে খুবই চিন্তিত।


ইভিএমের বিষয়টি সামনে এসেছে, কারণ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা জানিয়েছেন, আগামী বছরে অনুষ্ঠিতব্য সংসদীয় নির্বাচনে সর্বত্র ইভিএম ব্যবহার করা হবে। এটা ক্ষমতাসীন দলের ইচ্ছা। তবে মুক্ত ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের ক্ষেত্রে গত দুটি নির্বাচন কমিশনের ঘটনাপ্রবাহ সাধারণ জনগণকে চরম হতাশ করেছে। ফলে ইভিএম ব্যবহারের বিষয়টি এখন মানুষের মনোযোগ কাড়তে সক্ষম হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে গঠিত বর্তমান নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, তারা এখনও এ বিষয়টি নিয়ে মনস্থির করতে পারেনি। তারা সব রাজনৈতিক দল ও অংশীজনদের সঙ্গে কথা বলার পর সিদ্ধান্ত নেবেন।  বিএনপি এবং আরও কিছু রাজনৈতিক দল ইভিএম ব্যবহারের পুরোপুরি বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। তারা এ মেশিনকে 'স্বয়ংক্রিয় জাল ভোট দেওয়ার মেশিন' বলে অভিহিত করেছেন। তাদের দাবি, এ মেশিনগুলোকে এমনভাবে প্রোগ্রাম করা যায়, ভোটার যে মার্কার ওপরেই চাপ দেন না কেনো, একটি পূর্বনির্ধারিত মার্কার পক্ষে ভোট পড়বে। ভোটগ্রহণের কাগজেকলমে কোনো প্রমাণ থাকবে না। যদিও নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার হবে কি না, তা সম্পূর্ণ নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত, এ ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের ইভিএমের মাধ্যমে নির্বাচন অনুষ্ঠানের আকাঙ্ক্ষা তাদেরকে চাপের মুখে ফেলেছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও