বিসিএস বিশ্ববিদ্যালয়
পড়াশোনা বাদ দিয়ে একটি জাতি বিসিএস চর্চায় নিয়োজিত। ‘৫০-এ বাংলাদেশ : অতীত, বর্তমান এবং চ্যালেঞ্জ’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাজমুল করিম স্টাডি সেন্টার আয়োজিত বক্তৃতায় অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম জাতির এই বিসিএস নিমগ্নতায় ক্ষুব্ধ হয়ে ‘বিসিএস বিশ্ববিদ্যালয়’ প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছেন। যুক্তিসংগত শ্লেষের সঙ্গে তিনি বলেছেন, “‘বিসিএস বিশ্ববিদ্যালয়’ নামে একটা বিশ্ববিদ্যালয় খোলা হোক। সেখানে ‘প্রিলিমিনারি পরীক্ষা’, ‘ভাইভা’ ইত্যাদি নামে বিভাগ থাকবে। দারুণ চলবে কিন্তু।” (প্রথম আলো, ১৯ মে ২০২২) দারুণ চলবে এতে কোনো সন্দেহ নেই। এমনকি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কাক্সিক্ষত মানসম্পন্ন শিক্ষার্থীর ঘাটতি ঘটবে এটাও জোর দিয়ে বলা যায়। তিনি বলেছেন, বিসিএস বিশ্ববিদ্যালয় সবচেয়ে জনপ্রিয় বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে যাবে। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হওয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষকরা পাত্তা পাবেন না। অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাদের সেখানে প্রাধান্য দেওয়া হবে। তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, সহ-উপাচার্য, প্রক্টর ইত্যাদি হওয়ার জন্য আজকে শিক্ষকদের মধ্যে দলাদলি। আমি মনে করি, আত্মসমালোচনার প্রয়োজন আছে। আমরা সব সময় অন্যের দিকে আঙুল তুলি, নিজের দিকে তুলি না। সমালোচনা যদি সবার ভেতর থেকে শুরু হতো, তাহলে হতাশা থাকত না।’ (প্রাগুক্ত)
অধ্যাপক ইসলাম শ্লেষের সঙ্গে বিসিএস বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা বললেও শিক্ষায় অধোমুখী এবং দলাদলি ও দলভক্তিতে ঊর্ধ্বমুখী পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকেও ছাড় দেননি। শ্লেষ যত মিশ্রিতই থাকুক বাংলাদেশে কিংবা বৃহৎ অর্থে উপমহাদেশে আমলাতন্ত্র শিক্ষার যে ইতিহাস তা কিন্তু অধ্যাপক ইসলাম ইঙ্গিতকৃত পৃথক বিদ্যালয়/বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই উদ্ভূত। বিসিএসদের পূর্বসূরি সূচনালগ্নের রাইটার ও আইসিএদের কেউই অক্সফোর্ড কিংবা কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় উৎপাদিত প্রোডাক্ট নন।