সমাজে অযথাই বিভেদের দেওয়াল তৈরি করা কেন
সমুদ্রের ঢেউ যেমন একের পর এক সৈকতে এসে আছড়ে পড়ে, ঠিক তেমনই একের পর এক রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক নানা ইস্যু যেন আমাদের দেশে আছড়ে পড়ছে। কিছুদিন আগেও যখন দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে রেডিও, টেলিভিশনে, দৈনিক সংবাদপত্র, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে, মানুষের মুখে মুখে সমালোচনার স্ফুলিঙ্গ ঝরে পড়ছিল, ঠিক তখনই ভারতে পিকে হালদারের গ্রেফতারের ঘটনা যেন সেই স্ফুলিঙ্গে পানি ঢেলে দিল। পিকে হালদারকে নিয়ে সমালোচনার ঝড় চলল কিছুদিন। কলকাতাসহ বাংলাদেশের সব মিডিয়ায় পিকে হালদার প্রধান শিরোনাম দখল করে নিল। পিকে হালদার সম্পর্কে মানুষের আগ্রহ কম নয়! কলকাতা ও স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে একদিন খবর বেরোল, রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদকালে পিকে হালদার নাকি টাকা পাচারে জড়িত ভারত ও বাংলাদেশের রাঘববোয়ালদের নাম বলে দিয়েছে। স্বাভাবিক কারণেই এ দেশের রাঘববোয়ালদের নাম জানার জন্য বাংলাদেশের মানুষের মনে আগ্রহ জেগে ওঠে। দুষ্টু লোকেরা বলে, পিকে হালদারের এ দেশীয় দোসররা নাকি যে করেই হোক তাদের নাম যাতে প্রকাশ না পায় সে জন্য উঠে-পড়ে লেগেছে।
ইতোমধ্যে সে প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গেছে। দেশের এত বড় আর্থিক কেলেঙ্কারির নায়ক পিকে হালদারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নাকি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও পুলিশ সদর দপ্তর আলাদা দুটি দল কলকাতায় পাঠানোর পরিকল্পনা করেছে। তাদের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের সদস্যও থাকবেন। এটি একটি ভালো উদ্যোগ সন্দেহ নেই। দুদেশের অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের সম্মিলিত জিজ্ঞাসাবাদে পিকে হালদার যদি তার সহচরদের নাম প্রকাশ করে দেয়, মন্দ কী! তবে মন্দ লোকেরা বলে অন্য কথা, তাদের জিজ্ঞাসা, প্রকৃত রাঘববোয়ালদের নাম এ দেশের মানুষ আদৌ জানতে পারবে কি? এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর মরহুম খন্দকার ইব্রাহীম খালেদ বেসরকারি এক টেলিভিশনের ‘রাজকাহন’ নামক এক টকশোতে বলেছিলেন, ‘টাকা পাচারকারীরা এতই ক্ষমতাবান যে তাদের বিরুদ্ধে কোনো কিছু করা সম্ভব নয়।’