স্থবির রাজনীতি ঈদ ঘিরে চাঙ্গা
করোনার দুঃসময় কাটিয়ে রাজনীতি ফিরেছে পুরোনো চেহারায়। ঈদ ঘিরে স্থবির রাজনীতি এখন অনেকটাই চাঙ্গা। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, সরকারবিরোধী প্রধান দল বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের অধিকাংশ নেতা এবার নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় ঈদ কাটাবেন। কেউ কেউ থাকছেন রাজধানীতেই। যারা ঈদের দিনটি নিজ এলাকায় কাটাবেন, তারা উৎসবে যোগ দেওয়ার পাশাপাশি গণসংযোগ ও মতবিনিময়ের কাজটাও সারবেন।
নির্বাচন সামনে রেখে এরই মধ্যে ক্ষমতাসীন দলের নেতা ও মন্ত্রীরা ছুটছেন নিজ নিজ এলাকায়। যদিও নির্বাচনের প্রায় দেড় বছর বাকি, এখন থেকেই তৃণমূলের মানুষের সঙ্গে গণসংযোগ ও নেতাকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়াতে চাচ্ছেন তারা। কেউ কেউ জাকাত ও দানে ব্যস্ত থাকবেন। অনেকে ঢাকায় ঈদ করলেও আগেই নির্বাচনী এলাকায় গিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের পাশাপাশি নেতাকর্মী ও এলাকার মানুষের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এসেছেন। পাশাপাশি নিজ নির্বাচনী এলাকায় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের জন্য পাঠিয়েছেন ঈদ উপহার। ঈদের দিন ফোনে এবং ভার্চুয়াল মাধ্যমে নিজ নিজ এলাকার মানুষের সঙ্গে নিয়মিত ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়ও করবেন। ঈদের পরও এলাকায় যাবেন কেউ কেউ।
এদিকে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন ও আগামী নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা এখন থেকেই এলাকামুখী হচ্ছেন। তৃণমূলের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে কুশল ও শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন তারা। ঈদ উপহার বিতরণের পাশাপাশি ইফতার মাহফিলে অংশ নিয়ে গণসংযোগ করছেন, চা-চক্রসহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন। মনোনয়নপ্রত্যাশীরা দরিদ্র ও অসহায় মানুষের সাধ্যমতো সহায়তা করছেন। বেশিরভাগ নেতা ইতোমধ্যে নিজ এলাকায় জাকাতের কাপড়, নগদ টাকাসহ ঈদসামগ্রী তুলে দিয়েছেন হতদরিদ্রের হাতে।
আওয়ামী লীগ: আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, এখনও নির্বাচনের অনেক সময় হাতে রয়েছে। তবে গেল দু'বছর করোনায় রাজনীতি স্থবির থাকায় ঈদ ঘিরে এলাকার মানুষের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ হয়নি বললেই চলে। বর্তমানে করোনা সংকট কাটিয়ে আসন্ন ঈদ ঘিরে গণসংযোগ ও জনসম্পৃক্ততা বাড়ানোর সুযোগ মিলেছে। ফলে এই সুযোগ কোনোভাবেই হারাতে চাচ্ছেন না তারা। এই কারণে বেশিরভাগ নেতাই এবার ঈদে এলাকায় কাটানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
বিএনপি: সরকারবিরোধী আন্দোলনে তৃণমূলে বিএনপিকে চাঙ্গা করতে দলের হাইকমান্ড থেকে নির্দেশনা পাওয়ার পর বিএনপির অনেক সিনিয়র নেতা নিজ এলাকা ঘুরে এসেছেন। এলাকায় সাধারণ মানুষ ও নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছেন। মধ্যম সারির কিছু নেতা যারা আগামীতে মনোনয়নপ্রত্যাশী তারাও এলাকায় যাচ্ছেন। ঈদ সামনে রেখে কেন্দ্রীয় ও তৃণমূলের নেতারা আরও সক্রিয় হচ্ছেন। অনেকেই ঈদের দিন এলাকায় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে কাটানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন। দ্বাদশ নির্বাচনের আগে আর মাত্র একটি ঈদুল ফিতর রয়েছে। তাই এবারের ঈদকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনায় নিয়েছেন মনোনয়নপ্রত্যাশীরা।