মানব মূত্র বর্জ্য নয়, সম্পদ
অনেকদিন থেকেই বিজ্ঞানীরা এ কথা বলে আসছেন। মানুষসহ অন্যান্য অনেক প্রাণীর দেহে রেচন প্রক্রিয়ায় শরীর থেকে বর্জ্য-বিষাক্ত জৈব, অজৈব পদার্থ এই মূত্র বা প্রস্রাবের মাধ্যমে নির্গত হয় এবং রক্তকে পরিশুদ্ধ করে। স্বল্প অম্লধর্মী ও সামান্য হলুদ বা বর্ণহীন এই তরলের ৯৫ শতাংশ পানি আর বাকি ৫ শতাংশ হচ্ছে বর্জ্য। বিজ্ঞানীদের দৃষ্টি এই ৫ শতাংশ বর্জে্যর দিকে। কারণ এতে রয়েছে রাসায়নিক সারের প্রধান তিনটি উপাদান— নাইট্রোজেন, ফসফরাস এবং পটাসিয়াম। চাষাবাদের জন্য জমির উর্বরতা বাড়াতে শিল্প উৎপাদিত রাসায়নিক বা খনিজ সারের চমৎকার বিকল্প হতে পারে মানব মূত্র। সম্প্রতি মানুষের কল্যাণে এমন তরল ব্যবহারের জন্য গবেষক-বিজ্ঞানীরা বেশ উঠেপড়ে লেগেছেন। বিশেষ করে ফ্রান্সের একটি স্টার্ট আপ, ‘তপি অর্গানিক’ আবাদি জমির উর্বরতা বৃদ্ধিতে মানুষের মূত্র থেকে পরিবেশবান্ধব সার উৎপাদনে অনেকখানি এগিয়ে আছে।
রাসায়নিক সার আর সেইসঙ্গে মানুষ এবং অন্যান্য প্রাণীর মল-মূত্র পরিবেশদূষণের একটি বড় কারণ। রাসায়নিক সার ব্যবহারে মাটির অম্লত্ব বৃদ্ধি পায়, ভূত্বক আর্দ্রতা হারিয়ে রুক্ষ হয়। ফলে মাটিতে জৈব উপাদানের ঘাটতি দেখা দেয়। এছাড়াও সরাসরি জমির উর্বরতায় অনেক অবদান রাখে এমন সব উপকারী প্রজাতির অণুজীব হ্রাস পায়। বিশেষ উদ্বেগের কারণ হচ্ছে, কৃষকের বন্ধু কেঁচো সে মাটিতে বাঁচতে পারে না। পানিদূষণের ফলে বিভিন্ন প্রজাতির জলজ উদ্ভিদ এবং প্রাণী, বিশেষ আমাদের দেশের কিছু মাছ ইতিমধ্যে বিলুপ্ত হয়ে গেছে এবং আরো কিছু মাছ বিলুপ্তির পথে।
- ট্যাগ:
- মতামত
- মূত্রত্যাগ
- মূত্র
- মূত্র বিসর্জন