পৃথিবীর অনেক এলাকায় কীটপতঙ্গের বাস্তুতন্ত্র ধ্বংসের পথে: গবেষণা
বাড়ছে বিশ্বের তাপমাত্রা, সেই সঙ্গে মানুষের থাকার জায়গা আর খাবারের যোগান বাড়াতে গিয়ে বন উজাড় চলছে, চরমে পৌঁছাচ্ছে ভূমির ব্যবহার; সব মিলিয়ে পৃথিবীর অনেক এলাকায় কীটপতঙ্গের বাস্তুতন্ত্র ধ্বংসের দিকে এগিয়ে চলছে বলে উঠে এসেছে এক গবেষণায়।
বুধবার নেচার জার্নালে প্রকাশিত ওই গবেষণা প্রতিবেদনে প্রথমবারের মত জলবায়ু সংকট এবং আধুনিক কৃষিকাজের মধ্যে স্পষ্ট ও উদ্বেগজনক এক যোগসূত্র প্রকাশ পেয়েছে।
ওই গবেষণার বরাতে সিএনএস জানিয়েছে, যেসব জায়গায় এই সংকট অনেক বেশি, সেখানে কীটপতঙ্গের পরিমাণ ৫০ শতাংশের মত কমে গেছে। আর কীটপতঙ্গের প্রজাতির সংখ্যা কমেছে ২৭ শতাংশ।
লন্ডন ইউনিভার্সিটি কলেজের গবেষক এবং এ গবেষণা প্রবন্ধের প্রধান লেখক শার্লট আউটহোয়েইট বলছেন, স্থানীয় বাস্তুতন্ত্রে পরাগায়ন এবং খাদ্য উৎপাদনে পোকামাকড়ের যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে, সেই বিবেচনায় গবেষণার এ ফলাফল বড় ধরনের উদ্বেগের কারণ ঘটাচ্ছে।
“পোকামাকড় ধ্বংস হয়ে গেলে বা কমে গেলে জনস্বাস্থ্য এবং আমাদের খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে।”
যুক্তরাজ্যের সাসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানের অধ্যাপক ডেভ গলসন সিএনএনকে বলেছেন, “আমাদের ফসলের তিন-চতুর্থাংশের উৎপাদন নির্ভর করে কীটপতঙ্গের ওপর। (কীটপতঙ্গ কমে গেলে) ফসল উৎপাদন কমা শুরু করবে। স্ট্রবেরির মত অনেক কিছুই তখন আর ফলবে না।”
তিনি বলেন, “পোকামাকড় যদি দুনিয়ায় না থাকে, তাহলে এই সাড়ে ৭০০ কোটি মানুষকে আমরা খাওয়াতেও পারব না।”
আউটহোয়েইট সিএনএনকে বলেন, তাদের গবেষণায় কিছু অঞ্চলের পর্যাপ্ত তথ্য উপাত্ত মেলেনি। ফলে প্রতিবেদনে যা এসেছে, প্রকৃত পরিস্থিতি হয়ত তার চেয়ে অনেক বেশি খারাপ।
“আমার মনে হয়, এর আরও কিছু সুদূরপ্রসারী প্রভাব রয়েছে, যদিও সেগুলো কী তা এখনও জানি না আমরা। এখানে অনেক ধরনের পোকামাকড় জড়িত। সেগুলো অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে। কিছু বিষয়ে ওগুলোর ওপর আমরা এতটা নির্ভর করি যে, পরিস্থিতির ওপর আমাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকবে না।”
- ট্যাগ:
- আন্তর্জাতিক
- কীটপতঙ্গ
- বাস্তুতন্ত্র
- জাতিসংঘ