সরকারের উদ্যোগের অভাবে ই–কমার্সের এমন দশা
‘ই-কমার্স’ শুনলেই এখন মনে হয় একদল মানুষ পণ্য কেনার জন্য কোম্পানিতে টাকা জমা দিচ্ছে; আর সেই কোম্পানি পণ্য তো দিচ্ছেই না, টাকাও ফেরত দিচ্ছে না। কিছু প্রতিষ্ঠানের প্রতারণামূলক কার্যক্রমের কারণে সাধারণ মানুষের কাছে ‘ই-কমার্স’এখন সন্দেহজনক এক শব্দের নাম।
অথচ ই-কমার্সের জন্মই জীবনকে সহজ করার জন্য। অনলাইনের এই যুগে মানুষের ক্রয় আচরণ পাল্টে যাচ্ছে। ভিড় ঠেলে অনেকেই বাজারে যেতে চান না। উন্নত দেশগুলোতে এই প্রবণতা বহু আগেই শুরু হয়েছে। বাংলাদেশেও জনপ্রিয় হচ্ছিল ই-কমার্স। আর কোভিড-১৯ আসার পর ই-কমার্সের প্রয়োজন বেড়েছে আগের চেয়ে অনেক বেশি। আবার ই-কমার্স সাইটে লেনদেনও এখন অনেক সহজ। ক্রেডিট কার্ড ও ডেবিট কার্ড তো আছেই, মোবাইলে আর্থিক সেবা (এমএফএস) অর্থাৎ বিকাশ, রকেটেরও গ্রাহকসংখ্যা এখন অনেক বেশি।
অথচ দেশে ই-কমার্স খাত এখন চরম ভাবমূর্তিসংকটে। এ জন্য সরকারের দূরদৃষ্টির অভাব ও উদ্যোগহীনতাই অনেকখানি দায়ী। এ খাতের উন্নয়নে যে সময়ে যে কাজ করা দরকার ছিল, তা করা হয়নি। এ বিষয়ে সরকারের চার সংশ্লিষ্ট সংস্থা হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ এবং অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন বা এটুআই (বর্তমানে অ্যাসপায়ার টু ইনোভেশন) প্রকল্প।
নিজের মতোই এগোচ্ছিল
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইক্যাব) তথ্য অনুযায়ী, দেশে ই-কমার্স শুরু হয় ১৯৯৯ সালে। তবে পূর্ণাঙ্গ ও পেশাদার ই-কমার্সের যাত্রা শুরু তারও ১০ বছর পর অর্থাৎ ২০০৯ সালে। এ খাতের বিকাশ শুরু ২০১৪ সালে। এর পরের বছর ২০১৫ সালে সংগঠন হিসেবে স্বীকৃতি পায় ইক্যাব।
২০১৮ সালে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ডিজিটাল কমার্স নীতিমালা প্রণয়ন করে। তবে ই-কমার্স খাতের ব্যক্তিরাই বলছেন, এটা একটা ‘নামকাওয়াস্তে’ নীতিমালা। বিদেশিরা যে এ খাতে বিনিয়োগ করতে পারে, সেই দূরদৃষ্টি ছিল না নীতিমালা প্রণয়নকারীদের। এ নিয়ে দাবি উঠলে বিদেশি বিনিয়োগ উন্মুক্ত করে নীতিমালা সংশোধন করা হয় ২০২০ সালের জুনে। তখন করোনার প্রকোপ। এর দুই মাস পর আগস্টে গণমাধ্যমে উঠে আসে দেশের অন্যতম ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির অপকীর্তির নানা খবর।