কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

হাওরাঞ্চলে ফসলহানি নিয়তি হতে পারে না

সমকাল হাফিজ উদ্দিন খান প্রকাশিত: ২৪ এপ্রিল ২০২২, ১২:৫৬

হাওরে ফসল রক্ষার বিষয়টি কি সৌভাগ্য-দুর্ভাগ্য কিংবা নিয়তিনির্ভর হয়ে পড়েছে? প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ওপর মানুষের হাত নেই সত্য; কিন্তু দায়িত্বশীলদের দায়িত্বহীনতা, কারও কারোর অনিয়ম-দুর্নীতি কিংবা স্বেচ্ছাচারিতার কারণে সৃষ্ট বিপর্যয়ের তো প্রতিবিধান নিশ্চিত করা সম্ভব। আমরা দেখছি, দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাতটি জেলার প্রায় সাড়ে আট লাখ হেক্টরজুড়ে বিস্তীর্ণ হাওরাঞ্চল যেমন প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর, তেমনি তা জীববৈচিত্র্যেরও আধার। মুখ্যত সময়ের কাজ সময়ে করতে না পারার কারণে এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্নিষ্ট দায়িত্বশীল মহলের ব্যর্থতা এবং অনেকেরই স্বেচ্ছাচারিতা আর দুর্নীতির চরম মূল্য দিতে হচ্ছে হাওরের কৃষককে তাদের মেরুদণ্ড ভেঙে।


এবারও সুনামগঞ্জ ও কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলে ভাটি বাংলার প্রধান ফসল বোরো ধান পাকার সঙ্গে সঙ্গে ঘরে তোলার প্রস্তুতির আগেই কৃষকের কপালে ভাঁজ পড়ে দুশ্চিন্তার। কীভাবে তারা ফসল রক্ষা করবে- প্রশ্নটি সামনে বড় হয়ে দাঁড়ায়। তাদের এই ভাবনার মধ্যেই সংবাদমাধ্যমে উঠে আসতে থাকে হাওরাঞ্চলে বাঁধ ভেঙে বা উপচে পানি আসায় ফসল তলিয়ে যাওয়ার খবর। বিপুল ক্ষয়ক্ষতির চিত্র দৃশ্যমান হলেও টাকার অঙ্কে তা এখন পর্যন্ত কত গিয়ে দাঁড়াল, এর হিসাব মেলানো ভার। শুধু কিশোরগঞ্জ, সুনামগঞ্জই নয়; নেত্রকোনা জেলার হাওরের চিত্রও কৃষকের দুর্ভাবনা আর যেন সব হারানোরই মর্মস্পর্শী কাহিনি।


বাঁধ বাঁচাতে কৃষক ক্লান্ত হয়ে মাঠে যেটুকু ফসল টিকে ছিল, তা কোনোমতো ঘরে তুলতে তারা পরিশ্রান্ত। পত্রপত্রিকার সচিত্র প্রতিবেদনে দেখছি কৃষকের প্রাণপণ লড়াইয়ের খবর। কিন্তু বাঁধ রক্ষা করা তো কৃষকের কাজ বা দায়িত্ব নয়। এ জন্য সরকারের মন্ত্রণালয় রয়েছে। রয়েছে বিভিন্ন বিভাগ-দপ্তর। প্রায় প্রতিবছরই কেন হাওরাঞ্চলের কৃষককে ফসল রক্ষার জন্য যুদ্ধে নামতে হয়? আমরা জানি, এই বিপর্যয় অনেকটাই ঠেকানো সম্ভব। যথাযথভাবে ফসল রক্ষা বাঁধের সংস্কার, রক্ষণাবেক্ষণ, বাঁধের ত্রুটি-বিচ্যুতি, বর্ষা মৌসুমের আগেই পুঙ্খানুপুঙ্খ পর্যবেক্ষণের মধ্য দিয়ে কৃষক এবং কৃষিনির্ভর অর্থনীতির এই দেশকে বিপর্যয়ের ছোবল থেকে রক্ষা করা সম্ভব। এর উপায় কিংবা করণীয় সম্পর্কে এরই মধ্যে নানা মহল থেকে কম বলা হয়নি। সরকারের তরফে সিদ্ধান্ত কম নেওয়া হয়নি। বরাদ্দও কম দেওয়া হয়নি। এত কিছুর পরও কেন বিপর্যয় ঠেকানো যাচ্ছে না- এ জন্য নজর দেওয়া জরুরি উৎসে।


আমরা জানি, উজানের দেশ প্রতিবেশী ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলের চাপ আমাদের ভাটি বাংলাবাসীকে সইতে হয়। নেমে আসা পানির তোড় থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্যই তৈরি করা হয়েছিল ফসল রক্ষা বাঁধ। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, হাওর ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত সরকারের দায়িত্বশীল অনেকেরই অনিয়ম-দুর্নীতি ও ব্যর্থতার কারণে প্রায় প্রতিবছর বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয় হাওরাঞ্চলবাসীকে। এ ক্ষতি শুধু হাওরের কৃষকের নয়, বলতে গেলে গোটা জাতিরই। হাওর আমাদের খোরাকির ভান্ডার। দেশের মোট চাহিদার উল্লেখযোগ্য চাল যে অঞ্চল থেকে আসে, সেই অঞ্চলের সম্পদ রক্ষায় কেন এত দিনেও স্থায়ী ব্যবস্থা নিশ্চিত করা যায়নি- এর জবাব দেওয়ার দায় সরকারের দায়িত্বশীল কেউই এড়াতে পারেন না। গত কয়েক বছর দেশে ধানের বাম্পার ফলনের পরও করোনার অভিঘাতে আর্থসামাজিক কাঠামোতে যে বিরূপ প্রভাব পড়েছিল, তা অনেকটাই কাটিয়ে ওঠা গেলেও এবার ফসলহানির ফলে তা-ই আবার দেখা দেওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও