শিক্ষকদের নিরাপত্তা কে দেবে
নিজ জীবনের সরাসরি শিক্ষকতা, প্রশিক্ষক ও শিক্ষা প্রশাসক হিসেবে অর্জিত অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিয়মিত পরিদর্শনের উপর ভিত্তি করে বিষয়গুলো সংশ্লিষ্টদের জানানোর নিমিত্তে এবং নিজের আত্মতৃপ্তির জন্য পত্রিকার পাতায় আশ্রয় নিই। কিছু পত্রিকা গুরুত্ব সহকারে সেগুলো ছেপেও দেয়। কিছু শিক্ষক এবং শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা সেগুলো পড়েন, তাদের প্রতিক্রিয়া জানান। আবার কেউ কেউ উল্টো কথা লেখেন, বিভিন্ন মাধ্যমে জানান। এসব দিয়ে কি হবে, আসল কথা লেখেন। শিক্ষা জাতীয়করণ কবে হবে সেটা লেখেন। শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধির কথা লেখেন। যদিও আমার বহু লেখায় শিক্ষা জাতীয়করণের কথা, যুক্তিসহ তুলে ধরেছি। শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধি কেন দরকার তা লিখেছি। কিন্তু সব লেখায় তো আর একই কথা লেখা যায়না। সব লেখার টপিক এবং বিষয়ও এক নয়। শিক্ষকদের অবস্থার উন্নয়ন আমরা সবাই চাই। আবার শিক্ষকদের নিবেদিতপ্রাণ হওয়া, শ্রেণিকক্ষে ও শ্রেণিকক্ষের বাইরে একজন শিক্ষককে সে ধরনের ভুমিকায়ও সমাজ দেখতে চায়।
তবে ইদানিং সব ঘটনাকে ছাপিয়ে একটি বিষয় প্রতিদিনই দেখছি দেশের কোথাও না কোথাও শিক্ষকগণ কমিটির সদস্যদের হাতে, কিংবা রাজনৈতিক কোনো নেতার হাতে, তথাকথিত ছাত্রনেতাদের হাতে, অভিভাবকের হাতে এমনকি শিক্ষার্থীদের হাতে নিগৃহীত হচ্ছেন, লাঞ্ছিত হচ্ছেন, অপমানিত হচ্ছেন, শারীরিকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হচ্ছেন। এটি কেমন বিষয়? একজন শিক্ষক তা সে যে কোন পর্যায়েরই হোক, যে কোনো বিষয়েরই হোক তিনি শিক্ষকই। তার গায়ে মানুষ কীভাবে হাত তোলে? আর সমাজ ও রাষ্ট্র সেটিকে নিয়ে রাজনীতি করে, কালক্ষেপন করে? আমাদের দেশের শিক্ষকদের আমরা অতিশয় সম্মান প্রদর্শন করে আসছি যুগ যুগ ধরে, এটি আমাদের কালচার। পশ্চিমা দুনিয়ায় শিক্ষকদের আমাদের মতো সম্মান প্রদর্শন করে না; কিন্তু শিক্ষকের গায়ে হাত দেওয়া তারা কল্পনাও করতে পারেনা। তাহলে সমাজ কোথায় গিয়ে দাড়িয়েছে?