জঙ্গি হামলার আশঙ্কা উপেক্ষা করার মতো নয়
বিশাল নিরাপত্তাবেষ্টনী ও ব্যাপক পুলিশি তৎপরতার মধ্য দিয়ে পহেলা বৈশাখের উৎসব দেশব্যাপী শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হয়েছে। কোথাও কোনো অঘটন ঘটেনি।
পহেলা বৈশাখের আগের দিন ঢাকার পুলিশ কর্তৃপক্ষ মিডিয়ার কাছে বলেছে, পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশে জঙ্গি আক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় জঙ্গি উপস্থিতির তথ্য আছে। ভারত-বাংলাদেশে নতুন করে জঙ্গি আক্রমণ হতে পারে—এই তথ্যের নতুন তাৎপর্য আছে।
কিন্তু গত ছয় মাসে পাকিস্তানে ছোট-বড় প্রায় ৫০টি জঙ্গি আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে এবং অনবরত ঘটে চলেছে। তাই পাকিস্তানে জঙ্গি আক্রমণের নতুন আশঙ্কার তথ্য নতুন কোনো অর্থ বহন করে না। পাকিস্তান নিজেদের তৈরি ‘ফ্রাংকেনস্টাইনের দানব’ দ্বারা নিজেরাই আক্রান্ত হচ্ছে।
বাংলাদেশে জঙ্গি তৎপরতা মনিটরিং ও পর্যবেক্ষণে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সক্ষমতা আগের তুলনায় অনেক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এটা এক ধরনের আপাত স্বস্তির বিষয় হতে পারে। কিন্তু পুলিশি কার্যক্রমের মাধ্যমে জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা মুক্ত বাংলাদেশ গড়া যাবে না। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পেরিয়ে ৫১ বছরের মাথায় এসে পহেলা বৈশাখের উৎসবসহ মেলা-পার্বণ এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসব পালনে এখন বাংলাদেশে পুলিশি পাহারা অপরিহার্য হয়ে পড়েছে, যা সত্যি লজ্জাজনক, দুঃখজনক ও বেদনাদায়ক। আমাদের সামগ্রিক চরম ব্যর্থতা। আমরা ক্রমে খাদের কিনারে চলে যাচ্ছি এবং জেগে ঘুমাচ্ছি। জেগে ঘুমালে তাকে কেউ জাগাতে পারে না। ক্ষমতা, পদ-পদবিসহ কিছু একটা পাওয়ার লোভ এবং এর সঙ্গে দুর্নীতি আর স্বজনপ্রীতির ফাঁকফোকরের মধ্যে ক্রমেই ডালপালা ফেলছে সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদ। সুযোগ পেয়ে তারা এখন পেটের ভেতর থেকে আঘাত করছে। এত পুলিশি তৎপরতার পরও তো কিছুদিন পর পর অঘটন ঘটেই চলেছে।
- ট্যাগ:
- মতামত
- পর্যবেক্ষণ
- জঙ্গি তৎপরতা