এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ : করণীয় কী?
এডিস মশার ঘনত্ব বাড়ছে বলে গত কয়েক দিন ধরে বাংলাদেশের প্রায় সব গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। ঢাকা উত্তর এবং দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৯৮টি ওয়ার্ডের ১১০টি স্থানে প্রাক-মৌসুম এডিস মশার ঘনত্বের জরিপ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা। প্রতিবছর তিনবার (প্রাক-মৌসুম, মৌসুম এবং মৌসুম পরবর্তী) এডিস মশার ঘনত্বের জরিপ করা হয়ে থাকে।
এডিস মশার ঘনত্বের মাত্রা থেকে অনুমান করা যায় এডিস মশা বাহিত রোগ, বিশেষ করে ডেঙ্গু এবং চিকুনগুনিয়া কেমন হতে পারে। এ কাজের সাথে ২০১৪ সাল থেকে অদ্যাবধি আমি সরাসরি সম্পৃক্ত থেকে কাজের তদারকি করছি। ২০২২ সালের প্রাক-মৌসুম জরিপে ঢাকা শহরের ৪.৫৩ শতাংশ বাড়িতে এডিস মশার ঘনত্ব পাওয়া গেছে। এবছর প্রাক-মৌসুম এডিস মশার ঘনত্ব গতবছর প্রাক-মৌসুম এডিস মশার ঘনত্বের তুলনায় বেশি।
ইতিমধ্যে আমরা সকলেই জেনেছি, এডিস মশা জন্মায় পাত্রে জমা পানিতে। কোনো পাত্রে সাতদিন পানি জমে থাকলেই সেখানে এডিস মশা জন্মানোর সম্ভাবনা থাকে। গত কয়েক বছরে গবেষণায় আমরা দেখেছি, ঢাকা শহরে নির্মাণাধীন ভবনের বিভিন্ন স্থানে জমে থাকা পানি, লিফটের গর্ত, টাইলস ভেজানোর চৌবাচ্চা, ড্রাম, বালতি, ওয়াসার মিটার রাখার জায়গা ইত্যাদি স্থানে এডিস মশার ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি। এছাড়াও দইয়ের পাত্র, পানির জার, ভাঙা কমোড, বেসিনসহ যেকোনো ছোট বড় পাত্র যেখানে দুই সেন্টিমিটার পানি জমা হতে পারে সেখানেই এডিস মশা প্রজনন হতে পারে।
ডেঙ্গু, এডিস মশা বাহিত একটি ভাইরাস ঘটিত জ্বর রোগ। ডেঙ্গু ভাইরাসের চারটি স্ট্রেইন (ডেন-১, ২, ৩ ও ডেন-৪) এর যেকোনো একটি দিয়ে ডেঙ্গু জ্বর হতে পারে। আর এই ভাইরাস বহন করে এডিস প্রজাতির মশা।
এডিস মশার দুটি প্রজাতি ঢাকা শহরে দেখা যায়, তার মধ্যে একটি হলো এডিস ইজিপ্টি আরেকটি হলো এডিস অ্যালবোপিকটাস। এডিস ইজিপ্টিকে নগরের মশা বা গৃহপালিত মশা বলা হয়ে থাকে। এ মশা নগরীর বাড়ি এবং বাড়ির আশেপাশে বিভিন্ন পাত্রে জমে থাকা পানিতে জন্মায়।