 
                    
                    শৃঙ্খলিত উৎসব শৃঙ্খলিত মন
বর্ষবরণ উৎসবে যেদিন পুলিশ আধা কারফিউ জারি করলো সেদিন মনে হলো বর্ষবরণকে শৃঙ্খলিত করা হলো। এ প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হয়েছে তিন বছর আগে। ধীরে ধীরে আরও উৎসবে শৃঙ্খল পরানো হবে। কারণ কুসংস্কারচ্ছন্ন ধর্ম ব্যবসায়ীরা এ সবের বিরুদ্ধে ফতোয়া দিচ্ছেন। পুলিশের দৃষ্টিভঙ্গি তাদের পক্ষে। বাংলাদেশের পুলিশ ধারাবাহিকভাবে এ কাজ করে আসছেন বললে মনে হবে বাড়াবাড়ি উক্তি। কিন্তু গত পাঁচ বছরে বিভিন্ন আইনে ভিকটিমদের [ধর্মের অজুহাতে] গ্রেফতার করা হয়েছে।
যারা ধর্ম বিরুদ্ধ কাজ করছে তাদের নয়। হয়তো প্রশাসন, পুলিশ, রাজনীতিবিদ আমাদের পেশাদারদের মনে এ ধারণা হয়েছে, মন শৃঙ্খলিত করতে পারলে শাসনে সুবিধা। এভাবে সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল ধীরে ধীরে সংকুচিত হয়ে আসছে। পাকিস্তানি ঔপনিবেশ আমলে যখন সংস্কৃতিকে শৃঙ্খলিত করার প্রচেষ্টা নেওয়া হয়েছিল তখন থেকে সমাজের প্রগতিশীল অংশ এর বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করেছিল। পরে রাজনৈতিক দল বা নেতৃত্ব সে লড়াই এগিয়ে নেয়, সাধারণ তাতে অংশ গ্রহণ করে। সেদিক থেকে বিচার করলে মুক্তিযুদ্ধ একটি সাংস্কৃতিক লড়াইও বটে। এখন কিন্তু সে লড়াইর মাঠে প্রায় কাউকে পাওয়া যায় না।
এ দেশে লোকায়ত সংস্কৃতির বিরুদ্ধে ধর্মের ধ্বজাধারী বলে চিহ্নিত একদল লোক সব সময় অবস্থান নিয়েছিল। আমরা যে হিন্দু-মুসলমান সমন্বয়ের কথা বলি সেটি কখনও এ দেশে ছিল না। মুসলমানের সৃষ্টিকর্তা এক। হিন্দু বহু দেবতায় বিশ্বাসী। মিল হয়েছিল সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে যেটি দুই সম্প্রদায়েরই কট্টর অংশ পছন্দ করেনি। ধর্মকে ব্যবহার করেছে, যদিও ধর্মও সংস্কৃতির অঙ্গ।
বঙ্গবন্ধু এটি বুঝেছিলেন দেখে রাজনীতিতে ধর্ম নিষিদ্ধ করেছিলেন, ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করেছিলেন। এ ধরনের কাজ সমাজতান্ত্রিক দেশ ছাড়া পৃথিবীতে কোনো রাজনীতিবিদ করতে পারেননি। এবং তিনি তার সাংবিধানিক রূপও দিয়েছিলেন। বাংলাদেশে আর কেউ কখনও কোনো রাজনীতিবিদ ওরকম অসম সাহসী কাজ করতে পারবেন না। এখনকার রাজনীতিবিদরা জন্মেছেন বামন হয়ে, মৃত্যুও বামন হয়ে।
- ট্যাগ:
- মতামত
- অসাম্প্রদায়িকতা
 
                    
                 
                    
                 
                    
                 
                    
                 
                    
                 
                    
                 
                    
                -68f7ebaa39de2-6903ee942e8e5.jpg) 
                    
                