কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

এই চৈত্র-বৈশাখে কেমন আছে কৃষক?

যুগান্তর ড. আর এম দেবনাথ প্রকাশিত: ১১ এপ্রিল ২০২২, ১০:১৮

বাংলা চৈত্র মাসের আজ ২৮ তারিখ। এপ্রিলের ১৪ তারিখ পড়েছে আমাদের নববর্ষ-পহেলা বৈশাখ। এই সময়টা গ্রামের মানুষের জন্য বড় দুঃখের, আশঙ্কার, অনিশ্চয়তার। সামনে বোরো ফসল উঠবে বৈশাখের শেষে/জ্যৈষ্ঠের প্রথমে। এখন ঝড়-বৃষ্টি-অতিবৃষ্টি ও ঢলের সময়। হাওড় অঞ্চলের কৃষকরা এই সময় থাকে দারুণ দুশ্চিন্তায়। বছরের একটি মাত্র ফসল, ঘরে তোলা যাবে তো? না তুলতে পারলে সারা বছর যাবে অভাব-অনটনে, দেনা ও দাক্ষিণ্যে। অন্যান্য অঞ্চলের কৃষকদের মধ্যেও অনিশ্চয়তা। কালবেশাখী এসে ফসল মাড়িয়ে দিয়ে যায় কী না। খেতে সবার বোরো ফসল। বলা বাহুল্য, বোরো হচ্ছে দেশের প্রধানতম ধানি ফসল। বোরোর পরে আমন, তারপর আউশ। এক সময় আমনই ছিল প্রধানতম ধানি ফসল। বরিশালের ‘বালাম’ চাল, ময়মনসিংহের লাল ‘বিরুই’-এর নাম ছিল মুখেমুখে। এখন শুনি শুধু ‘মিনিকেটে’র (মিনিকিট) নাম। সাদা ফকফকে চাল। কত নামে বিক্রি হয়। খাদ্যগুণ নেই বললেই চলে। এসবের মধ্যেই আমাদের বসবাস। খেতে বোরো কিন্তু শীতের সবজির সরবরাহ এখন ভাটির দিকে। শীতকাল শেষ, এখন বসন্তকাল। বাংলার ষষ্ঠ ঋতু। রঙ-এ ভরা ঋতু। প্রকৃতি বিরাট পরিবর্তনের মুখোমুখি। শুরু হবে ভয়াবহ গ্রীষ্ম। এ সময় মানুষের হাতে টাকা (ক্যাশ) থাকে না। গ্রামের মানুষের মধ্যে দেখা দেয় অভাব-অনটন। এর সুযোগ নেয় মহাজনরা-‘সুদি ব্যবসায়ীরা’। চড়া দামে তারা কৃষককে ঋণ দেয়। অনেক কৃষক খেতের ফসল অগ্রিম বিক্রি করে দেয় ‘ক্যাশের’ অভাবে। অবশ্যই অল্প দামে। নিতান্তই বাঁচার তাগিদে।


এটা বরাবরের অভিজ্ঞতা। কৃষক মরে নানাভাবে। উৎপাদনের সময় সে উৎপাদনের উপকরণ পায় না, দাম থাকে বেশ উঁচুতে। সার, সেচের পানি, কীটনাশক অনেক সময় অঞ্চলভেদে পাওয়া যায় না। পাওয়া গেলেও দাম থাকে চড়া। আবার বিপণন বা বিক্রির সময় সে পড়ে বড় বিপদে। ক্রেতা নেই। সরকারি ক্রয়ের ব্যবস্থা অপ্রতুল। তাও সরকার কিনে ধান/চাল ও পাট। অন্যান্য ফসল কেনার সরকারি কোনো ব্যবস্থা এখনো গড়ে উঠেনি। অদক্ষ এই বিপণন ব্যবস্থার শিকার সাধারণ মানুষ। তার রবিশস্যের দাম সে পায় না। যা পায় তা খুবই নগণ্য। শহরে-নগরে যে পণ্য বিক্রি হয় তার এক-তৃতীয়াংশও সে পায় না। বাকিটা যায় ফড়িয়া, মধ্যস্বত্বভোগীদের পকেটে।


একটি প্রতিবেদনে দেখছি শহরবাসী কর্তৃক দেওয়া দামে ভাগ আছে পুলিশের এবং চাঁদাবাজদের। তিন তারিখের একটি কাগজে সরকারি একটি সংস্থার একটি গবেষণা প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে। সংস্থাটির নাম ‘কৃষি বিপণন অধিদপ্তর’। তারা দেখিয়েছেন কৃষকরা যে বাঁধাকপি সাড়ে তেরো টাকায় বিক্রি করেন, তা ঢাকার বাজারে বিক্রি হয় ৩৮ টাকায় অর্থাৎ কৃষক পর্যায়ে যে দামে পণ্য বিক্রি হয় তার তিন গুণ দামে তা বিক্রি হয় ঢাকার বাজারে। শুধু বাঁধাকপি নয়, বেগুন, শিম, ফুলকপি, কাঁচামরিচ ইত্যাদি ক্ষেত্রেও তাই। অন্য কৃষিজ পণ্যে কি ভিন্ন অবস্থা? না, আদৌ নয়। মাঠ পর্যায়ের জরিপে বলা হয়েছে, এর কারণ মধ্যস্বত্বভোগী, পরিবহণ খরচ ও পুলিশের চাঁদাবাজি। এই খবর দিতে গিয়ে একটি কাগজ তাদের খবরের শিরোনাম করেছে: ‘চাঁদাবাজি কমলে দামও কমবে।’ এফবিসিসিআই-এর সভার আলোচনার বরাত দিয়ে খবরটিতে বলা হয়েছে, ‘যেভাবে সরকারি টোল আদায় হয়, সেভাবেই সড়ক ও বাজারে গুপ্ত চাঁদাবাজি হচ্ছে বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের।


বস্তুত সড়ক-মহাসড়কে পুলিশ ও কাঁচাবাজারে প্রভাবশালীদের ‘গুপ্ত’ চাঁদাবাজিকে পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার একটি বড় কারণ হিসাবে উল্লেখ করেছেন ব্যবসায়ীরা। যদি তা না হতো, তাহলে এই চৈত্র মাসে যখন লাউ সাধারণত কেউ খেতে চায় না, তখন একটি লাউয়ের দাম ৭০ টাকা কেন হবে? আমি নিজেই দুই-তিন দিন আগে মাঝারি ধরনের একটি লাউ ৭০ টাকায় কিনেছি। বলাবাহুল্য, অন্যান্য কৃষিপণ্যেও একই জরিমানা দিনের পর দিন আমরা দিয়ে যাচ্ছি। এটা কি নতুন খবর? না, বহুদিন ধরে এসব নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। কত অর্থমন্ত্রী কত কথা বললেন কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। মুশকিল হচ্ছে এ প্রেক্ষাপটে কৃষি হয়ে পড়েছে একটি লোকসানি পেশা-ব্যবসা। কৃষকরা এই পেশায় থাকতে চান না। তারা তাদের ছেলেমেয়েদের এই কাজে নিয়োজিত হতে দিতে চান না। অনেক ক্ষেত্রে জমি তারা অনাবাদি রাখেন। কৃষি কোনোমতে টিকে আছে ভর্তুকি ও ভাতার বদৌলতে। সারে ভর্তুকিতে, সেচের পানিতে ভর্তুকি। বিদ্যুৎ, কীটনাশক ওষুধ ও বিপণনেও ভর্তুকি দিয়ে এই পেশাটিকে কোনোমতে জিইয়ে রাখা হয়েছে। সরকার এতসব চেষ্টা করলে কী হবে, মাঠ পর্যায়ে ঘটছে নানা অনভিপ্রেত ঘটনা। সম্প্রতি আত্মহত্যার মতো ঘটনাও ঘটছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও