শর্ত শিথিল, আসছে বড় পদোন্নতি
ঈদুল ফিতরের আগেই বড় ধরনের সুখবর পেতে চলেছেন সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষকরা। প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি পেতে চলেছেন তাদের ২৪৪ জন। এ ছাড়া ১৮ জনকে করা হচ্ছে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। প্রসঙ্গত, সারাদেশে ৩৫২টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৪২৩ জন সহকারী প্রধান শিক্ষক পদোন্নতির উপযুক্ত। কিন্তু প্রধান শিক্ষক পদ শূন্য রয়েছে ২৪৪টি।
চলতি সপ্তাহে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বিভাগীয় পদোন্নতি কমিটির (ডিপিসি) সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব আবু বকর ছিদ্দীক ডিপিসির সভাপতি। এর বাইরে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ, অর্থ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দু'জন যুগ্ম সচিব এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব খালেদা আখতার ডিপিসির সদস্য।
মাউশি থেকে জানা গেছে, সারাদেশে প্রধান শিক্ষকের সংকট এখন তীব্র। বহু জেলায় সরকারি হাই স্কুলে কোনো প্রধান শিক্ষক নেই। কোনো কোনো বিভাগে মাত্র দুই থেকে তিনজন প্রধান শিক্ষক রয়েছেন। বাকি স্কুলগুলো চলছে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে। সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে বর্তমানে ৩৫১টি প্রধান শিক্ষকের পদ রয়েছে। তার মধ্যে ২৩৩টি শূন্য। বাধ্য হয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক অথবা যেখানে সহকারী প্রধান শিক্ষক নেই, সেখানে জ্যেষ্ঠ কোনো সহকারী শিক্ষককে প্রধান শিক্ষকের ভারপ্রাপ্ত পদ দিয়ে কোনো রকমে চালিয়ে নেওয়া হচ্ছে। কেবল প্রধান শিক্ষক নয়, সহকারী প্রধান শিক্ষকের বিপুলসংখ্যক পদও ফাঁকা। সহকারী প্রধান শিক্ষকের ৪৭৭টি পদ থাকলেও এ পদে কেউ নেই ১৫২ সরকারি স্কুলের।
এ ছাড়া প্রধান শিক্ষক পদমর্যাদার জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার ১৮টি পদ বর্তমানে শূন্য। ফলে জেলাগুলো মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তদারকি করারও কেউ নেই। যেসব জেলায় কোনো জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নেই, সেগুলো হলো- ফরিদপুর, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, লক্ষ্মীপুর, বগুড়া, ঝালকাঠি, ভোলা, জামালপুর, নেত্রকোনা, কক্সবাজার, হবিগঞ্জ, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, বান্দরবান, মাগুরা, চুয়াডাঙ্গা ও ঝিনাইদহ।
প্রধান শিক্ষক না থাকা সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে বর্তমানে প্রশাসনিকসহ নানা কাজকর্মে দেখা দিয়েছে জটিলতা। পদোন্নতির অপেক্ষায় থেকে অনেকেই অবসরে চলে গেছেন, কেউ বা যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন। এতেও শিক্ষকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ ও হতাশা।
মাউশির সহকারী পরিচালক (মাধ্যমিক) আমিনুল ইসলাম টুকু সমকালকে বলেন, প্রতিবছর শিক্ষকরা অবসরে যাচ্ছেন। কিন্তু এসব শূন্য পদ পূরণ করতে কিছুটা সময় লাগছে। কারণ, নিয়োগবিধি অনুসারে ফিডার পদ পূর্ণ হলে তবেই পদোন্নতি দেওয়া যায়। তবে সরকার চাইলে প্রমার্জন করেও পদোন্নতি দিতে পারে। এবার দুই বছর প্রমার্জন করায় একসঙ্গে বিপুলসংখ্যক প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হলো।
জানা গেছে, ভয়াবহ প্রধান শিক্ষক সংকট দেখা দেওয়ায় সরকার ফিডার পদ দুই বছর প্রমার্জন করে এসব শূন্য পদ পূরণের উদ্যোগ নেয়। পদোন্নতির পর এই শিক্ষকরা পদে যোগ দিলে প্রধান শিক্ষক পদের সংকট প্রায় পুরোটাই কেটে যাবে।