কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

আবার কি শান্তির সারস ডানা মেলবে

কালের কণ্ঠ গাজীউল হাসান খান প্রকাশিত: ০৬ এপ্রিল ২০২২, ০৯:৩৮

‘দ্য ক্রেইনস আর ফ্লাইং’, ১৯৫৭ সালে নির্মিত রাশিয়ান (সোভিয়েত ইউনিয়ন) একটি ‘মাস্টারপিস’ ছায়াছবি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধভিত্তিক একটি মানবিক কাহিনি নিয়ে নির্মিত সেই ছায়াছবি দুই তরুণ-তরুণীর সহজাত প্রেম, স্বপ্নের নীড় রচনার বাসনা ও অবারিত মুক্ত দিগন্তে ভেসে চলার রোমাঞ্চ নিয়ে শুরু হয়েছিল। যুদ্ধের দামামা তখনো বেজে ওঠেনি। মস্কোর বিস্তৃত নীলাকাশে নিরুদ্বিগ্ন প্রশান্তির হাতছানি।


বরিস ও ভেরোনা পালিয়ে মিলিত হয়েছে ভোরের সূর্যোদয় দেখার প্রত্যাশায়। পূর্ব দিগন্তে তখন রক্তিম আভার ক্ষীণ আভাস। কী অপূর্ব এক মায়াবী পরিবেশ। ঠিক তখনই তারা দেখতে পেল দূর আকাশে একঝাঁক শ্বেতশুভ্র লম্বা গলার সারস উড়ে যাচ্ছে। আহা কী অপূর্ব দৃশ্য! এরা যেন এক স্বপ্নময় দূর অজানার ডাক দিয়ে গেল। তখন ১৯৪১ সালের মাঝামাঝি। দেখতে দেখতে অশান্ত হয়ে উঠল গোটা ইউরোপ। জার্মানির হিটলারের নািস বাহিনী আক্রমণ করে বসেছে রাশিয়ার ওপর। এক অজানা আশঙ্কায় কেঁপে উঠল ভেরোনিকার কোমল হৃদয়। বরিসকে শেষ পর্যন্ত আর ধরে রাখা গেল না। বন্ধুপ্রতিম এক সম্পর্কিত ভাই; মার্কের কাছে সব খবরাখবর নিয়ে বরিস স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে নাম লিখিয়ে যুদ্ধে চলে গেল। যাওয়ার আগে ভেরোনিকা বহু চেষ্টা করেও বরিসের সঙ্গে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হলো।


যুদ্ধ যখন শেষের দিকে, ক্রমে ক্রমে জার্মানির পরাজয়ের খবরে রাশিয়া উদ্বেলিত হয়ে উঠেছিল। রণক্ষেত্র থেকে পর্যায়ক্রমে দলে দলে ফিরে আসছিল বিজয়ী সেনারা। কিন্তু বরিসের দেখা পায় না ভেরোনিকা। এর মধ্যে একই ফ্রন্টে যুদ্ধ করা এক পরিচিত কমান্ডারের কাছে ভেরোনিকা নিশ্চিত খবর পেল যে যুদ্ধাহত বরিস আর বেঁচে নেই। মুহূর্তের মধ্যে যেন আকাশ ভেঙে পড়ল ভেরোনিকার মাথায়। চরম হতাশা ও বিড়ম্বনার বিবর থেকে আকাশ পানে মুখ তোলে ভেরোনিকা দেখতে পেল মুক্ত সুনীল আকাশে আবার একঝাঁক অতি লম্বা গলার সারস উড়ে যাচ্ছে কোথাও, আরো কোনো দূর দিগন্তের সন্ধানে—‘দ্য ক্রেইনস আর ফ্লাইং’।


ভল্গা তীরের মস্কো এবং ডিনাইপার তীরের কিয়েভসহ সমগ্র রাশিয়া ও ইউক্রেনে এখন বসন্তের হাওয়া বইতে শুরু করেছে। তাদের আদিগন্ত নীলাকাশে এখন শ্বেতশুভ্র লম্ব গলার সারস উড়ে যাবে ঝাঁকে ঝাঁকে। প্রাচীনকাল থেকে দুই যমজ ভাইয়ের মতো সহাবস্থানরত রাশিয়া ও ইউক্রেনের বর্তমানে বিবদমান নেতারা সম্প্রতি বসেছিলেন তুরস্কের ইস্তাম্বুলে। তাতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তাঁর চালিয়ে যাওয়া সামরিক অভিযানের লাগাম ক্রমে ক্রমে টেনে ধরার ব্যাপারে সম্মতি প্রকাশ করেছেন। রুশ সাম্রাজ্যের আদি রাজধানী ও অর্থডক্স ক্রিশ্চিয়ানিটির অন্যতম প্রধান কেন্দ্র হিসেবে পুতিন এবং রাশিয়ার অধিবাসীদের কাছে ইউক্রেনের কিয়েভের একটি বিশেষ মর্যাদা রয়েছে।


ইউক্রেনের পৃথক মাতৃভাষা থাকলেও সোভিয়েত শাসনামলে সব সদস্য রাষ্ট্রেই সরকারি মাধ্যম ছিল রুশ ভাষা। কিন্তু ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়া এবং ২০১৪ সালে রাশিয়ার ক্রিমিয়া অঞ্চল দখল করাকে কেন্দ্র করে ইউক্রেনীয়দের বহুদিনের লালিত জাতীয়তাবাদী ধ্যান-ধারণা অনেকটাই যেন আবার জ্বলে ওঠে। রাশিয়ার সামরিক নিরাপত্তা ও প্রভাববলয় থেকে সম্পূর্ণভাবে মুক্ত হয়ে পশ্চিমা ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও সামরিক জোট ন্যাটোতে যোগ দিতে আগ্রহী হয়ে পড়ে জর্জিয়া ও ইউক্রেন। তাতে আঞ্চলিক নিরাপত্তার দিক থেকে প্রচণ্ড ঝুঁকিতে পড়ে রাশিয়া।


শুধু তা-ই নয়, কৃষ্ণসাগরের উত্তর তীরে অবস্থিত ক্রিমিয়া, অডেসা কিংবা মারিওপোল সমুদ্রবন্দরকেন্দ্রিক বহির্বাণিজ্য ও রাশিয়ার জন্য চরম দুশ্চিতার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সোভিয়েত জামানায় ক্রিমিয়া এবং তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলগুলো ছিল তাদের সাবমেরিন ও অন্যান্য প্রতিরক্ষাবিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ঘাঁটি। সেই অবস্থায় দক্ষিণ-পূর্ব রুশভাষী ইউক্রেনীয় প্রদেশ দনবাসের দোনেত্স্ক ও লোহানস্ক অঞ্চলে দেখা দেয় বিভিন্ন ধরনের জাতীয়তাবাদী দ্বন্দ্ব ও সংঘাত। তাতে ক্রমে ক্রমে অসহিষ্ণু হয়ে ওঠে রাশিয়া। বিশ্বের সর্ববৃহৎ রাষ্ট্র রাশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলেও রাজনৈতিক অসন্তোষ দেখা দেয়। এককালের সমাজতান্ত্রিক শাসনাধীন সোভিয়েত ব্লকের ১৫টি নতুন রাষ্ট্রের মধ্যে জাতীয়তাবাদী উন্মেষ ও তৎপরতা সবার মধ্যে রাশিয়াকেই সবচেয়ে বেশি শঙ্কিত করে তোলে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও