প্রশান্তপারে স্বদেশ ও গণতন্ত্রের ভাবনা
কয়েক দিন আগে আমরা নিউ সাউথ ওয়েলস পার্লামেন্টের একটি ভবনে বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপনের জন্য মিলিত হয়েছিলাম। এই অঙ্গরাজ্যের রাজধানী সিডনি। যেখানে আমরা প্রায় ৬০-৭০ হাজার বাংলাদেশি বসবাস করি। শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত এই পার্লামেন্ট ভবনটি দেখে মনে হবে বাংলাদেশের কোনো জেলা হাইস্কুল। সে রকমের লাল পিলার দেওয়া দালান। দালানের রংও লালচে। ঢোকার আগে বোঝার উপায় নেই ভেতরটা কেমন সুন্দর সাজানো আর পরিপাটি। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো চোখধাঁধানো বলে কিছু নেই। আমি এ কথা বলতেই পারি জৌলুশ আর জেল্লায় আমাদের দেশ সব গাছ ছাড়িয়ে এক পায়ে দাঁড়িয়ে এখন।
যে ভবনটিতে অনুষ্ঠান হয়েছিল তার ভেতরটা বুকজুড়ানো ঠান্ডা অনুভূতি এনে দেয়। ঢুকেই দেখি, যেদিকে তাকাই বই আর বই। চারদিকের দেয়ালজুড়ে অসাধারণভাবে সাজানো পুস্তক শুধু সাজানো থাকে না, মন্ত্রী-সাংসদেরা আসেন, পড়েন, রেফারেন্সের জন্য নিয়ে যান। আমাদের ছোট অথচ সাংঘাতিক তাৎপর্যপূর্ণ আয়োজনটিতে শামিল ছিলেন নামজাদা সব কূটনীতিক। রাশিয়ান কনসাল জেনারেল নেপালের রাজদূত থেকে অস্ট্রেলিয়ান সাংসদ মেম্বার অব লেজিসলেটিভ কাউন্সিল—সবাই এসেছিলেন। যে কথাটি বলতে চাইছি, বিরক্তিহীন অল্প কথার ভাষণ দেওয়ার আগে-পরে বেশ কিছু সাংসদ তাঁদের প্রশ্নোত্তর পর্বের জন্য উঠে চলে গেলেন। কেউ কেউ ফিরে এসে কথা বললেন। এর নাম জবাবদিহি, এর নাম গণতন্ত্র। তাঁরা সেদিন প্রোগ্রামের কারণে না গেলেও কিছু হতো না। কিন্তু সেটা স্বাধীন দেশের সভ্য গণতন্ত্রে অসম্ভব। তাঁরা যে জনগণের সেবক, এটা তাঁরা শুধু জানেন না, বিশ্বাসও করেন। তাই অনুষ্ঠানের ফাঁকে ফাঁকে তাঁরা এমনটি করছিলেন।