টিউমার ও ক্যান্সারের মধ্যে পার্থক্য কী?
টিউমার শব্দটি শুনলে লোকে ভাবে ক্যান্সার, আবার ক্যান্সার শুনলে লোকে ভাবে টিউমার। যেমন লোকে বলে- ব্রেইন টিউমার হয়েছে, কিংবা ব্রেইন ক্যান্সার হয়েছে! কিন্তু দুটোই কি একই! মোটেও নয়। যেমনটা ব্রেস্ট টিউমার কিংবা ব্রেস্ট ক্যান্সার, দুটো একই নয়।
টিউমার হলো কিছু অস্বাভাবিক টিস্যুর সমাবেশ, যেখানে কোষগুলো অস্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় সংখ্যা বৃদ্ধি করে। টিস্যু মানে একই ধরনের কিছু কোষ, যখন কোথাও এক হয়ে একই ধরনের কাজ করে।
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন ডা. অপূর্ব চৌধুরী।
আমাদের শরীরে বিলিয়ন নয়, ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন কোষ আছে। ধরা হয় একজন প্রাপ্তবয়স্কের দেহে গড়ে ত্রিশ ট্রিলিয়নের মতো কোষ থাকে। জন্মের সময় এ সংখ্যা চার শতাংশের এক শতাংশ থাকে। কোষের ভেতর কিছু নিয়মে পুরনো কোষ মরে যায়, নতুন কোষ জন্ম নেয়, আবার কিছু কোষ সাইজে বাড়ে, কিছু কোষ সংখ্যায় বাড়ে। কিন্তু কোন কোষ মরে যাবে এবং কোন কোষ কতগুলো নতুন কোষ জন্ম দিতে পারবে, কোন কোষের সাইজ কেমন হবে, কোষের এমন সব বৈশিষ্ট্যকে নিয়ন্ত্রণের জন্য কোষের ভেতর কিছু নির্দেশ বা নিয়ম থাকে। আর সে নিয়মগুলো থাকে ডিএনএতে। কোনো কারণে ডিএনএ-এর মধ্যে থাকা এ নির্দেশ প্রক্রিয়া পরিবর্তন হয়ে গেলে কোষগুলো তখন অস্বাভাবিকভাবে নতুন কোষের জন্ম দিতে থাকে, পুরনো কোষ মরে না গিয়ে হযবরল ঘুরতে থাকে, অথবা নতুন জন্ম নেওয়া কোষগুলো কাজবিহীন ঘুরে বেড়ায়।
কারণ কোষগুলোতে কোথায় গিয়ে থামতে হবে তার নির্দেশ থাকে না, কী কাজ করবে তার নির্দেশটি পরিবর্তন হয়ে যায়। তখন পরিবর্তিত ডিএনএ-এর নির্দেশে রোবটের মতো একের পর এক নতুন কোষের জন্ম দিতে থাকে, নতুন অস্বাভাবিক কোষের সংখ্যা বেড়ে বেড়ে স্বাভাবিক কোষের কাজে ব্যাঘাত ঘটায়, বুড়ো কোষগুলোর পটোল তোলার প্রক্রিয়া থেমে গিয়ে আবর্জনার মতো জমা হতে থাকে শরীরে।