
ডলার বাড়িয়ে দিচ্ছে পণ্যের দাম
আন্তর্জাতিক বাজারে ভোগ্যপণ্যের দাম ও জাহাজভাড়া বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে প্রতিনিয়ত আমদানি খরচ বাড়ছে। অন্যদিকে রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় কমছে। ফলে দেশে বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে মার্কিন ডলারের চাহিদা বেড়ে গেছে। আর এ চাহিদা মেটাতে কিছু ব্যাংক বেশি দাম দিয়ে প্রবাসী আয় সংগ্রহ করছে। প্রবাসীদের পাঠানো আয় তথা ডলার এরপর বেশি দামে ভোগ্যপণ্য আমদানিকারক ও ছোট ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করছে। এতে প্রবাসী ও তাঁদের স্বজনেরা ডলারের বিনিময়মূল্য কিছুটা বেশি পেলেও এর প্রভাব কিন্তু পড়ছে আমদানি করা ভোগ্যপণ্যের ওপর, যা দেশে মূল্যস্ফীতি বাড়িয়ে দিচ্ছে।
জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে তিন টাকা পর্যন্ত বেশি দিয়ে প্রবাসীদের কাছ থেকে ডলার সংগ্রহ করছে কোনো কোনো ব্যাংক। অবস্থা এখন এমন দাঁড়িয়েছে, যেদিন ডলারের চাহিদা যত বাড়ে, সেদিন এর দামও তত বৃদ্ধি পায়। ফলে ভোগ্যপণ্য আমদানিকারকদের অন্তত ৮৯ টাকা ২৫ পয়সা দরে ডলার কিনতে হচ্ছে। বর্তমানে প্রতি ডলারের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্ধারিত দাম ৮৬ টাকা ২০ পয়সা।
দেশের শীর্ষ পর্যায়ের খাদ্যশস্য আমদানিকারক বিএসএম গ্রুপের চেয়ারম্যান আবুল বশর চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমদানি দায় পরিশোধের সময় এলে ব্যাংক বলে ডলার নেই। অন্য ব্যাংক থেকে কিনতে হবে। তখনই দাম বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। ফলে বাধ্য হয়ে আমরা বেশি দামে ডলার কিনছি। মঙ্গলবার ৮৯ টাকা ২৫ পয়সা দরে ডলার কিনতে হয়েছে। ডলারের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেক সময় ব্যবসায়ে লোকসানেও পড়তে হচ্ছে।’
অভিযোগ আছে, মূলত বেসরকারি খাতের কয়েকটি ব্যাংক ডলারের মূল্যবৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রাখছে। তাদের মতো সরকারি ব্যাংকগুলো চাইলেই বেশি দামে ডলার সংগ্রহ ও বিক্রি করতে পারছে না।
আলাপকালে একটি বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাধ্য হয়ে বেশি দামে ডলার আনতে হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যাপ্ত ডলার দিলে বা দেশে কম দামে পাওয়া গেলে আমরা বেশি দাম দিয়ে ডলার আনতাম না। বাজার পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে দাম যতই হোক না কেন ডলার আনতে হচ্ছে।’