দুর্যোগে বছরে ক্ষতি ৩০ হাজার কোটি টাকা
২০১৫ থেকে ২০২০, এই ৬ বছরে দেশে নানান ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগে ১ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। ফলে বছরে গড়ে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩০ হাজার কোটি টাকা, যা পদ্মা সেতুর নির্মাণ ব্যয়ের প্রায় সমান।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) জরিপ প্রতিবেদন বাংলাদেশ দুর্যোগ–সংশ্লিষ্ট পরিসংখ্যানে (বিডিআরএস) এই চিত্র উঠে এসেছে। বিবিএস অবশ্য জানায়, ক্ষতির এ হিসাব শুধু দুর্যোগপ্রবণ এলাকার। পুরো বাংলাদেশের নয়।
বিবিএসের জরিপে আরও উঠে আসে, ২০২০ সাল পর্যন্ত আগের ৬ বছরে দুর্যোগে ক্ষতি ব্যাপকভাবে বেড়েছে। ২০০৯ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ৬ বছরে ক্ষতি হয়েছিল ১৮ হাজার কোটি টাকার কিছু বেশি। পরের ৬ বছরে তা ১০ গুণ বেড়ে যায়।
বিবিএস গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এক অনুষ্ঠানে জরিপের ফলাফল তুলে ধরে। এতে দুর্যোগের ধরন, ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা ও তার বহুমাত্রিক প্রভাব উঠে এসেছে।
অনুষ্ঠানে জরিপের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন বিবিএসের সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের পরিচালক রফিকুল ইসলাম। তিনি জানান, দেশের সব জেলার দুর্যোগপ্রবণ এলাকা থেকে দৈবচয়নের ভিত্তিতে ১ লাখ ২৭ হাজার ২০০টি খানা (যে কয়জন সদস্যের এক চুলায় রান্না হয়) থেকে জরিপের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।
জরিপের ফলাফলে দেখা যায়, ওই ৬ বছরে বিভিন্ন দুর্যোগে ৭৫ লাখ খানা আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে বেশি আক্রান্ত হয়েছে বন্যায়, ৫৫ শতাংশ। এর বাইরে ঘূর্ণিঝড়ে ৩৪, শিলাবৃষ্টিতে ১৭ এবং বজ্রপাত ও বজ্রঝড়ে ১৪ শতাংশ খানা আক্রান্ত হয়েছে। কিছু কিছু খানা খরা, জলমগ্নতা, জলোচ্ছ্বাস, নদীভাঙন, টর্নেডো, লবণাক্ততা, ভূমিধস ও অন্যান্য দুর্যোগে আক্রান্ত হয়। আগের ছয় বছরের তুলনায় দেখা যায়, বন্যা, ঘূর্ণিঝড় ও নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত খানার অনেকটাই বেড়েছে।
বন্যায় ক্ষতির পরিমাণও বেড়েছে আশঙ্কাজনক হারে। ২০১৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ৬ বছরে বন্যায় আর্থিক ক্ষতি হয়েছে এক লাখ কোটি টাকার কিছু বেশি। অথচ আগের ছয় বছরে এ ক্ষতির পরিমাণ ছিল মাত্র চার হাজার কোটি টাকার আশপাশে।