অনিশ্চয়তা কাটছে না বেসরকারি অনার্স-মাস্টার্স স্তরের সাড়ে ৫ হাজার শিক্ষকের
সরকারি বেতনের অংশ পাওয়ার আশায় ২৯ বছর কাটালেও সহজে অনিশ্চয়তা কাটছে বেসরকারি অনার্স-মাস্টার্স স্তরের সাড়ে ৫ হাজার শিক্ষকের। বেসরকারি কলেজের ডিগ্রি স্তরে শর্টকোর্স বাধ্যতামূলক করার পরিকল্পনা নেওয়া হলেও অনার্স-মাস্টার্স স্তরের শিক্ষকদের বিষয়ে এখনও সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এদিকে অনার্স-মাস্টার্স কোর্স বন্ধ করা এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে গঠন করা কমিটি প্রায় এক বছরেও বেশি সময় কোনও সুপারিশ জানায়নি সরকারকে। বিষয়টি জটিল হওয়ার কারণে সময় লাগছে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এই পরিস্থিতিতে বুধবার (৩০ মার্চ) সংবাদ সম্মেলন আহ্বান করেছেন বেসরকারি কলেজের অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকরা।
সরকারের পরিকল্পনা ও অনার্স-মাস্টার্স স্তরের শিক্ষকদের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রণালয়ের গঠন করা কমিটির আহ্বায়ক জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মশিউর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন দেওয়ার শর্তে অধিভুক্ত কলেজগুলো শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছে। সরকারের কাছ থেকে কোনও অর্থ তারা নেবে না বলেছে। সরকারের (মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের) জনবল কাঠামোতে এসব শিক্ষকদের পদ নেই, সে কারণে চাইলেই তাদের এমপিওভুক্ত করার সুযোগ নেই। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বেতন দেবে এমন শর্তে অধিভুক্তি দেয়নি। অধিভুক্ত কলেজগুলোকে বার বার চিঠি দিয়ে বেতন দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। যদি তারা বেতন না দেয় সেক্ষেত্রে অধিভুক্তি বাতিল করা ছাড়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের করণীয় নেই। তবু মানবিক কারণে এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক হয়েছে।
উপাচার্য অধ্যাপক মশিউর রহমান আরও বলেন, ডিগ্রি স্তরে শর্টকোর্স চালু করতে হলে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। শর্টকোর্স চালু করা গেলে অনার্স-মাস্টার্স স্তরের যোগ্য শিক্ষকদের হয়ত ডিগ্রিস্তরে অনেককে নিয়ে আসা সম্ভব হবে। কিন্তু তার আগে প্রয়োজন প্রশিক্ষক দেওয়া। আমরা এসব বিষয় নিয়ে কয়েক দফা বৈঠক করেছি।
বাংলাদেশ বেসরকারি কলেজ অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষক ফেডারেশনের আহবায়ক হারুন-অর-রশিদ বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত বেসরকারি কলেজগুলোয় অনার্স-মাস্টার্স স্তরের সাড়ে ৫ হাজার শিক্ষক গত কয়েক বছর শান্তিপূর্ণ ও অহিংস আন্দোলনসহ যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে অনেকবার আবেদন-নিবেদন করেছি। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। সর্বশেষ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চাহিদামতো সাড়ে ৫ হাজার শিক্ষকের পরিসংখ্যান দিয়েছি। কিন্তু মন্ত্রণালয়ের গঠন করা কমিটি বা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সুনির্দিষ্ট কোনও কিছু জানাতে পারেনি। বিগত ২৯ বছর ধরে নামমাত্র সম্মানী নিয়ে আবার অনেকে বিনা সম্মানীতে শিক্ষকতা পেশায় কাজ করলেও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কোনও পদক্ষেপ নেয়নি।