পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে উচ্চাশা ও উৎকণ্ঠা

সমকাল এম শামসুল আলম প্রকাশিত: ২৯ মার্চ ২০২২, ১১:৫৯

পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র উদ্বোধনের পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, একটা বেজ পাওয়ার প্লান্ট তৈরি হলো। কিন্তু এ থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ ব্যবহার কৌশলের ওপর নির্ভর করছে অনেক কিছু। এখন পর্যন্ত আমরা যে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা তৈরি করেছি, তা 'পিকিং' পাওয়ার প্লান্টের মাধ্যমে এবং তা এর মধ্যে ৫০ শতাংশের বেশি। সন্দেহ নেই, এই পাওয়ার প্লান্টের সংখ্যা বেশি হয়ে গিয়েছিল। এর সুফল আমরা দীর্ঘ মেয়াদে পাইনি। সে ধরনের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা বেশি হওয়ায় উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যায়। বেজ লোড পাওয়ার প্লান্ট যদি ইকোনমিক হয় তা পিকিং পাওয়ার প্লান্টের ব্যয় প্রশমিত করে। তবে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র সেই হিসাবে কম ব্যয়ে বেজ লোড পাওয়ার প্লান্ট হওয়ার একটা সুযোগ তৈরি করলেও 'কিন্তু' আছে। এর সুফল দৃশ্যমান হওয়ার বিষয়টি নির্ভর করছে প্রথমত এই পাওয়ার প্লান্টের উৎপাদন ব্যয়ের ওপর। এর ব্যয় বেশিই হবে।


দ্বিতীয় কথা হচ্ছে, আমরা এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের মাধ্যমে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ পাব তা চাহিদার নিরিখে কতটা কাজে আসবে। তৃতীয়, এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য কয়লা আমদানি করা হবে। বিশ্ববাজারে কয়লা আমদানি ব্যয় যদি না কমে কিংবা বেড়ে যায়, তাহলে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র বেজ লোড হওয়ার পরও চ্যালেঞ্জ থেকে যাবে। যদি কয়লার আমদানি ব্যয় কমে তাহলে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের মাধ্যমে উৎপাদিত বিদ্যুৎ আমরা স্বল্পমূল্যে অর্জনের সুবিধা পেতে পারি। চাহিদা আমাদের এখন তেমন একটা নেই। এমতাবস্থায় চেষ্টা করা হচ্ছে দক্ষিণবঙ্গে এই বিদ্যুৎ দিয়ে সেখানকার সংকট মেটানো ও শতভাগ ব্যবহারের উদ্যোগ ফলপ্রসূ করা। যদি এ প্রচেষ্টা সফল হয় তাহলে বিদ্যুতের ব্যয় কমানোর জন্য এই কেন্দ্র সহায়ক হতে পারে। তবে সবই নির্ভর করছে ব্যবহার, এর বিতরণ প্রক্রিয়াসহ আরও কিছু বিষয়ের ওপর।


প্রশ্ন উঠেছে, যে পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে, সে তুলনায় সঞ্চালন লাইন সম্প্রসারিত হচ্ছে কিনা। এ কথা বলা দরকার, বিতরণ-সঞ্চালন লাইন নিয়ে যেসব কথা বলা হয়, সেগুলো উদ্দেশ্যমূলক। কারণ এখন পর্যন্ত বিতরণ-সঞ্চালন লাইনের সক্ষমতার অভাবে বিদ্যুৎ ভোক্তা পর্যায়ে যাচ্ছে না- এমন বক্তব্য যুক্তিযুক্ত নয়। বরং অপরিকল্পিতভাবে লাইন সম্প্রসারণের কারণে ক্ষতির পরিমাণ স্ম্ফীত হয়েছে। এর মধ্যে দফায় দফায় এ ব্যাপারে যে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে, সে সবই বাস্তব চাহিদার সঙ্গে খুব বেশি অসামঞ্জস্যপূর্ণ। সেগুলোর কোনোটিই বাস্তবতার নিরিখে তৈরি করা হয়নি। পরিকল্পনা সব সময় সুদূরপ্রসারী ও সর্বব্যাপী কল্যাণের বিষয়গুলো আমলে রেখে করা জরুরি। যখন বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যাপক ঘাটতি ছিল, তখন বিতরণ লাইন কোন যুক্তিতে সম্প্রসারিত হয়েছিল তা প্রশ্নের বিষয়। এই যে অপচয় তা তো ক্ষতিই করেছে; লাভ নয়। সঞ্চালন লাইন সম্প্রসারণে চীনা কোম্পানি কাজ করছে। তা ছাড়া জাপানি কোম্পানি চট্টগ্রামে যে ট্রান্সমিশন লাইন নির্মাণ করেছে, এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট অভিযোগ আছে। অনিয়ম কিংবা শর্ত লঙ্ঘনের অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও নিরপেক্ষভাবে এ বিষয়গুলো যাচাই-বাছাই হয়নি। তারপর ভেড়ামারা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে যে ট্রান্সমিশন লাইন আনা হচ্ছে ঢাকায়, এর কোনো দরকার আছে বলে মনে করি না।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও