মুক্তিযুদ্ধ ও ধর্মনিরপেক্ষতা
১৯৭১ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কিছু মূলনীতির ভিত্তিতে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। এর মধ্যে প্রধানতম ছিল বাঙালি জাতীয়তাবাদ এবং ধর্মনিরপেক্ষতা। সেই সময় ‘জয় বাংলা’ স্লোগান জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সবাইকে একত্রিত করেছিল। মুক্তিযুদ্ধের সময় জয় বাংলা জাতীয় স্লোগানে রূপান্তরিত হয়। ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়েই মুক্তিযোদ্ধারা পাক হানাদার বাহিনীকে মোকাবিলা ও পরাজিত করে।
মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম ভিত্তি ছিল অসাম্প্রদায়িক চেতনা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের পর ১৯৭২ সালে যে সংবিধান প্রণয়ন করা হয়, সেখানে ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’কে চার মূলনীতির একটি নীতি হিসেবে যুক্ত করা হয়।
উল্লেখ্য, ১৯৭০-এর নির্বাচন এবং পরে মুক্তিযুদ্ধেও জনগোষ্ঠীর একটা অংশ বিরোধিতা করেছিল। ১৯৭৫-এর পট পরিবর্তনের পর রাষ্ট্রের সেই শক্তিকে সঙ্গে নিয়ে তখন সামরিক শাসকরা অসাম্প্রদায়িকতা ও বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনার বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক ধর্মীয় রাজনীতির বিস্তার ঘটিয়েছেন। চার মূলনীতির মধ্যে ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ’ নিয়ে শুরু থেকেই কোনো কোনো গোষ্ঠী আপত্তি তোলে। বাঙালি জাতীয়তাবাদকে যখন সংবিধানে সন্নিবেশিত করা হচ্ছিল, তখনই পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রতিনিধিরা বললেন যে, তারা বাঙালি নন। এরপর ইসলামপন্থিরাও বাঙালি জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে শুরু করলেন এবং তারা পাকিস্তানি ধারণা ফেরত আনার চেষ্টা করলেন।
- ট্যাগ:
- মতামত
- মুক্তিযুদ্ধ
- ধর্মনিরপেক্ষতা