অসাম্প্রদায়িক জাতির দেশ
বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলনের সময় থেকেই হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টানসহ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জাতীয় সম্মিলনে এক স্বাধীন ভূমির স্বপ্ন সূচিত হতে থাকে। দল, মত, ধর্ম, শ্রেণি নির্বিশেষে ‘আমরা সবাই বাঙালী’ এই স্লোগানে জনগণের ভাবনার পথ হতে থাকে উন্মুক্ত।
৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক অবিস্মরণীয় ভাষণে তার ইঙ্গিত ছিল সুস্পষ্ট। তিনি সেখানে উল্লেখ করেছিলেন, ‘এই বাংলায়- হিন্দু-মুসলমান, বাঙালি, নন-বাঙালি যারা আছে তারা আমাদের ভাই। তাদের রক্ষার দায়িত্ব আপনাদের উপরে, আমাদের যেন বদনাম না হয়।’ কারণ তিনি উদার গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে বিশ্বাস করতেন। গড়তে চেয়েছিলেন উদার গণতান্ত্রিক সরকার।
স্বাধীন বাংলাদেশে ’৭২ সালের সংবিধানে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি বা ধর্মীয় রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। এরপর জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসেন। তিনি সংবিধানে ধর্মীয় রাজনৈতিক দলের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির পথ খুলে দেন। এরপর পঞ্চদশ সংশোধনীর পর সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা ফিরিয়ে আনা হয়, তবে দুঃখের বিষয় ধর্মভিত্তিক রাজনীতি তখন নিষিদ্ধ করা হয়নি। ফলে ধর্মীয় রাজনৈতিক দলগুলো ধর্মকে কাজে লাগিয়ে, এর অপব্যবহার আরম্ভ করে।
২০০১ সালের নির্বাচনের পর বাংলাদেশের বরিশাল, বাগেরহাট, পাবনা ও নড়াইলসহ বিভিন্ন জেলায় ব্যাপক সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। এরপর থেকেই শুরু হয় হিন্দু, খ্রিস্টান বা বৌদ্ধদের উপর প্রায়শই হামলার ঘটনা। কয়েক বছর আগে রামু, নাসিরনগর, নরসিংদী, লক্ষ্মীপুর বা এ সপ্তাহে ওয়ারী, খিলগাঁও বলে কথা নেই, ক্রমশই বেড়ে চলেছে উগ্র মৌলবাদের আগ্রাসন।
তৃণমূলে উগ্রবাদের চাষাবাদ হচ্ছে অবিরত। এমনকি মুসলিমদের শত সহস্র বছরের উৎসব শবে বরাত উদযাপনকেও হারাম বলে নিষিদ্ধ করার আহ্বান আসছে। না
- ট্যাগ:
- মতামত
- অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ