শান্ত বান্দরবানে ‘মগ পার্টি’, এক মাসে ১৫ খুন
তিন পার্বত্য জেলার মধ্যে শান্ত শহর বলে বান্দরবানের পরিচিতি দীর্ঘদিনের। অন্য দুই জেলা রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি সশস্ত্র দলগুলোর মধ্য হানাহানি, সংঘর্ষের ঘটনা অহরহ ঘটে। বান্দরবান ছিল এর বাইরে। সেই জেলায় এবার এক মাসের মধ্যে ১৫টি খুনের ঘটনা ঘটল। এতে জেলার বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন।
স্থানীয় অধিবাসী ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বান্দরবানে সাম্প্রতিক হত্যা-খুন চাঁদাবাজির ঘটনার সঙ্গে একদল মারমা যুবকের সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠেছে। ৩০-৪০ জনের এই দলে সবার বয়স ১৮ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে এবং তারা সবাই মারমা সম্প্রদায়ের। এ কারণে স্থানীয়রা এদের মগ পার্টি নাম দিয়েছে। চাঁদাবাজিসহ নানা সন্ত্রাসী ঘটনায় নিজেদের মগ পার্টি হিসেবেই পরিচয় দেয় এরা। তাদের হামলার মূল লক্ষ্য সরকারের সঙ্গে পার্বত্য চুক্তি সইকারী সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি পরিষদের (জেএসএস) নেতা-কর্মীরা। এ কারণে জেএসএস কর্মীরাও মগ পার্টির ওপর হামলার সুযোগ খুঁজতে থাকে।
গত শনিবার দুপুরে জেলার রোয়াংছড়ি উপজেলায় পালংক্ষ্যং এলাকার সাঙ্গু নদীর পাড়ে দুই পক্ষের গোলাগুলির পর পুলিশ চার কিশোরের গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করে। জেএসএসের সশস্ত্র একটি দল এদের হত্যা করে বলে জানায় স্থানীয়রা। নিহতদের বয়স এবং সাধারণ বেশভূষা দেখে এদের মগ পার্টির সদস্য বলে সন্দেহ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। মরদেহের পরিচয় পাওয়া যায়নি, কোনো দাবিদারও নেই। এ কারণে বেওয়ারিশ হিসেবে গত সোমবার সন্ধ্যায় মরদেহ চারটি মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়।
বান্দরবানের এই পরিস্থিতে উদ্বিগ্ন জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) জেরিন আখতারও। গত রোববার এসপি কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি স্বীকার করেন, জেলার পরিস্থিতি উদ্বেগজনক পর্যায়ে চলে গেছে। কয়েকটি খুন ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ভাবিয়ে তুলেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছেন বাহিনী সদস্যরা।
- ট্যাগ:
- বাংলাদেশ
- খুন
- সশস্ত্র লড়াই