নাম প্রকাশ হচ্ছে না, আমরা প্রজাই রয়ে গেলাম
যাঁরা খবরের খোঁজ রাখেন, তাঁরা ইতিমধ্যে জেনে গেছেন যে নির্বাচন কমিশন গঠনের সার্চ কমিটি বা অনুসন্ধান কমিটি ঘোষণা দিয়েছে, তারা যে ১০ ব্যক্তির নাম মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাবে, তা প্রকাশ করা হবে না। কে বা কারা, অর্থাৎ কোন রাজনীতিক, পেশাজীবী সংগঠন অথবা ব্যক্তি এই ১০ ব্যক্তির নাম প্রস্তাব করেছিলেন, সেটাও আমরা জানতে পারব না। উত্তম!
এই সেদিন পশ্চিমা বিশ্বের এক পরিচিত আইনজীবীর সঙ্গে কথা হচ্ছিল। তিনি নিজ দেশেই মামলা–মোকদ্দমা পরিচালনা করেন। নিজের দেশ ছাড়াও অন্য দু-চারটে দেশের আইন–আদালতের ব্যাপারে কাজ করেছেন। সেই সুবাদে প্রায় বছর বিশেক আগে তাঁর সঙ্গে পরিচয়। তখন তিনি বাংলাদেশের আইন–আদালতসংক্রান্ত একটা প্রকল্পে জড়িত ছিলেন। এখন দু-চার মাসে হয়তো একবার টেলিফোনে আলাপচারিতা হয়।
কয়েক দিন আগে তিনি আমাকে জানান, তাঁর দেশের উচ্চতর আদালতের বিচারক পদের জন্য তিনি দরখাস্ত করেছেন এবং তা নিয়ে প্রায় তিন মাস তিনি ব্যস্ত ছিলেন। অনেক লম্বা দরখাস্ত এবং তিনি বিচারক হিসেবে নির্বাচিত হবেন কি না, সেটা জানতে তিন থেকে পাঁচ মাস সময় লেগে যেতে পারে। উচ্চতর আদালতের বিচারক হওয়ার জন্য যে দরখাস্ত ফরম, তাতে গোটা বিশেক ব্যক্তির নাম দিতে হয়, যাঁরা তাঁর কাজের সঙ্গে পরিচিত।
প্রথম হলো তাঁকে ছয় থেকে আটজন বিচারকের নাম দিতে হবে, যাঁদের আদালতে তিনি মামলা পরিচালনা করেছেন। সেই সঙ্গে আরও ছয় থেকে আটজন এমন আইনজীবীর নাম দিতে হবে, যাঁরা জটিল মামলায় তাঁর প্রতিপক্ষ আইনজীবী ছিলেন। সেই সঙ্গে আরও চার থেকে পাঁচজন লোকের নাম দিতে হবে, যাঁরা জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ের তাঁর কাজের সঙ্গে পরিচিত ছিলেন।
বিচারক নিয়োগের অনুসন্ধান কমিটি এই ২০ জনের সঙ্গে কথা বলবেন, তাঁদের মতামত নেবেন। এ প্রক্রিয়া তিন থেকে ছয় মাস লেগে যায়। বলা বাহুল্য, দরখাস্তে এর সঙ্গে সঙ্গে তাঁর আইনশিক্ষা, আইনজীবী হিসেবে কী কাজ করেছেন, কোথায় কাজ করেছেন, কোন কোন বড় মামলা তিনি পরিচালনা করেছেন, আইনসংক্রান্ত অন্য কোনো কাজে জড়িত ছিলেন কি না, কোনো গবেষণা জার্নালে তাঁর লেখা ছাপা হয়েছে কি না, বই প্রকাশ হয়েছে কি না ইত্যাদি তথ্য দিতে হয়।