মিয়ানমার : বসন্ত বিপ্লব থেকে গৃহযুদ্ধে
২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে অং সান সু চির নির্বাচিত এনএলডি সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করেছিলেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইং। মিয়ানমারের গণতন্ত্রকামী জনতা ২ ফেব্রুয়ারি থেকেই সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে সিভিল ডিসঅবিডিয়েন্স মুভমেন্টের (সিডিএম) অসহযোগের ডাক দেয়। স্প্রিং রেভল্যুশন বা ‘বসন্ত বিপ্লব’ শান্তিপূর্ণ অসহযোগ আন্দোলন হলেও তাতে ব্যাপকভাবে হামলা চালায় সেনাবাহিনী।
তরুণসহ সমাজের বিভিন্ন অংশ প্রতিরোধ গড়ে তোলার পর সেনাবাহিনীর নৃশংসতা বাড়তে থাকে। নগরকেন্দ্রিক আন্দোলন একসময় ছড়িয়ে পড়ে মিয়ানমারের গ্রামে গ্রামে। গত এক বছরে মিয়ানমার সেনাদের হাতে অন্তত দেড় হাজার বেসামরিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। এর পাল্টা হিসেবে বিকল্প সরকার নামে পরিচিত এনইউজির সামরিক শাখা পিডিএফ তিন হাজার সেনাসদস্যকে হত্যার দাবি করেছে।
মিয়ানমারের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে পড়া জনতার প্রতিরোধ বাহিনীর (পিডিএফ) হামলা জোরালো হয়েছে। দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি অবস্থানে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে আলোচনার মাধ্যমে শান্তির পথ ক্রমেই সংকুচিত হয়ে পড়ছে। এমন এক পরিস্থিতিতে এক অজানা গন্তব্যের পথে হাঁটছে দেশটি।
জাতীয় ঐক্যের সরকার (এনইউজি) সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে হামলা জোরদারের প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে। এনইউজির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়ে মন ২০২২ সালের মধ্যে জেনারেল মিন অং হ্লাইংয়ের সরকারকে হটিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী। মিয়ানমারের গণমাধ্যমে ইরাবতীকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ডিসেম্বরে তিনটি জেলায় পিডিএফের হামলায় সেনাবাহিনীর ২৯১ জন সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন। হামলায় পিডিএফ সদস্যও মারা গেছেন। সেনাবাহিনীর অন্তত দুই হাজার সদস্য পক্ষ ত্যাগ করে পিডিএফে যোগ দিয়েছেন। আরও অনেক সেনাসদস্য পিডিএফে যোগ দেওয়ার অপেক্ষায় আছেন।
- ট্যাগ:
- মতামত
- নির্বাচন
- সরকার
- ক্ষমতাচ্যুত
- অং সান সু চি
- জাতিসংঘ