
ভেজাল গুড়ে 'গুড়ে বালি'
'চকচক করলেই সোনা হয় না'। প্রচলিত বাংলা প্রবাদটি বাজারে থরে থরে সাজানো চকচকে খেজুর গুড়ের ক্ষেত্রে পুরোপুরি খাটে। ভেজালের ভিড়ে আসল খেজুর গুড় খুঁজে বের করা এখন অনেকটাই দুর্ভেদ্য। চকচকে যে পাটালি আর ঝোলা গুড় বাজারে দেখা যায়, সেগুলোর বেশিরভাগই ভেজালে ঠাসা।
কথিত ওই খেজুর গুড়ে মেশানো হয় চিনি, রং, হাইড্রোজ, সোডা, ফিটকিরি, গো-খাদ্য, আটা-ময়দা ও পাথুরে চুন। ফলে গুড় কিনতে গিয়ে প্রতিনিয়ত ঠকছেন ভোক্তারা। শুধু তাই নয়, এই ভেজাল গুড় খেয়ে নানা জটিল রোগেও আক্রান্ত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
সংশ্নিষ্টরা বলছেন, উৎপাদন পর্যায়ে গুড়ে এসব ক্ষতিকর উপাদান মেশানো হয়।
ভেজাল রোধে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে বড় ধরনের হুমকিতে পড়বে জনস্বাস্থ্য। তবে আইনি জটিলতা থাকায় সতর্ক করা ছাড়া কিছুই করার থাকে না বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ (বিএফএসএ)।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, কারওয়ান বাজারসহ কয়েকটি স্থানে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, খুচরা ব্যবসায়ীরা খেজুর গুড়ের কেজি সর্বনিম্ন ১০০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছেন। এর মধ্যে প্রতি কেজি খেজুরের পাটালি ১০০ থেকে ২৫০ এবং ঝোলা (তরল) গুড়ের কেজি ২৫০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা হচ্ছে। ভেজাল আর খাঁটি গুড়ের কারণে পণ্যটির দামে এই বিশাল ফারাক দেখা যায় বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
ভেজালের সাত-সতেরোঃ
খুচরা ব্যবসায়ী ও নিরাপদ খাদ্য সংশ্নিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সাধারণত গুড়ের রং গাঢ় বাদামি হয়। চিনি মেশানো গুড় দেখতে খুব চকচকে হয়। আর হলদেটে রঙের গুড় হলে বুঝতে হবে অতিরিক্ত রাসায়নিক মেশানো হয়েছে। আবার কখনও নিম্নমানের ঝোলা ও নরম গুড় গলিয়ে তাতে রং, সোডা, গো-খাদ্য, আটা-ময়দা, পাথুরে চুন দিয়ে গুড় তৈরি করা হয়। গুড়ের রং সাদা ও শক্ত করতে মেশানো হয় চিনি। এসব গুড়ে স্বাদ ও গন্ধ থাকে কম।