দেওবন্দ কেন বিজেপির টার্গেট
ভৌগোলিক বিবেচনায় উত্তর প্রদেশের (ইউপি) দেওবন্দ ছোট এক নগর। লোকসংখ্যা হবে মাত্র এক লাখ। এই নগর ঘিরে বিস্তৃত বিধানসভার নির্বাচনী এলাকায় ভোটার সাড়ে তিন লাখের মতো। ইউপির ১৫ কোটি ভোটারের আসন্ন যুদ্ধে এ অতিনগণ্য হিস্যা। তারপরও এখানকার নির্বাচনের শেষলগ্নে বিজেপি নিশানা করেছে ‘দেওবন্দ’কে। সাধারণ বিবেচনায় মনে হতে পারে এই নিশানা এই নগরের ঐতিহাসিক মাদ্রাসাটির কারণে। কিন্তু যোগী আদিত্যনাথ, অমিত শাহ ও নরেন্দ্র মোদির দলের হিসাব-নিকাশ আরও বড় বিবেচনা থেকে। দেওবন্দকে আলোচনায় এনে ধর্মের ভিত্তিতে ভাগ করা হচ্ছে রাজ্যের ভোট। এ রকম ভাগাভাগি নির্বাচনী ফর্মুলা হিসেবে হিন্দুত্ববাদকে বিজয়ী হতে সাহায্য করেছে অতীতে। সেই পুরোনো চেষ্টাই চলছে নতুন আদলে।
দেওবন্দ পরিচয়ের অপরাধীকরণ যেভাবে
উত্তর প্রদেশের একেবারে উত্তরের জেলা সাহারানপুরে দেওবন্দ এলাকার খ্যাতি মূলত দারুল উলুম মাদ্রাসাকে ঘিরে। দেড় শ বছরের পুরোনো এই বিদ্যাপীঠ দক্ষিণ এশিয়ায় ইসলামের সুন্নি ঘরানার মুসলমানদের কাছে সুপরিচিত ও খ্যাতনামা। ঐতিহাসিক সুনামের সূত্রে এর শিক্ষার্থীরা অনেক সময় দেওবন্দি হিসেবে নিজেদের পরিচয় দেয়। সেই পরিচয়ের পরম্পরায় দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশেও গড়ে উঠেছে অনেক ‘দেওবন্দি’ মাদ্রাসা। সেসব মাদ্রাসায় পড়ে উত্তর প্রদেশে কোনো দিন না এসেও দূরদেশের শিক্ষার্থীরা অনেক সময় নিজেদের দেওবন্দি পরিচয় দেয়। পরিচয়ের এই সিলসিলায় এখন বিপদে আসল দেওবন্দ। আফগান তালেবানদের দেওবন্দি পরিচয় ব্যবহার করে বিজেপি নেতারা সন্ত্রাসী তকমা দিয়ে হীনম্মন্য করতে চাইছেন উত্তর প্রদেশের দেওবন্দকে, এমনকি পুরো রাজ্যের মুসলমানদেরও।