নির্বাচন কমিশন আইন ও ‘প্যারাসিটামল তিন বেলা’ তত্ত্ব
২০২০ সালের মে মাসে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন তাঁর সরকারি বাসভবনে করোনাকালের নিষেধাজ্ঞা ভেঙে পার্টি করে ভীষণ বিপদে পড়েছেন। তাঁর প্রধানমন্ত্রিত্ব চলে যাওয়ার পরিস্থিতিও তৈরি হয়েছে। কিছুদিন আগে প্রথম যখন বিষয়টি সামনে আসে, তখন জনসন–সরকার জোরেশোরে করোনার অমিক্রন ধরন নিয়ে বিধিনিষেধ এবং করণীয় নিয়ে খুব ঢাকঢোল পেটানো শুরু করে। তখন তাঁর প্রতিপক্ষ এবং নানা মিডিয়ার পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছিল, করোনা নিয়ে তিনি এখন অপ্রয়োজনীয়ভাবে ‘মাঠ গরম’ করছেন, তাঁকে নিয়ে ওঠা তীব্র বিতর্কটি থেকে মানুষের দৃষ্টি সরিয়ে নিতে।
বিতর্কের সময় মানুষকে ভুল জায়গায় নিয়ে যাওয়ার এই চর্চাকে যুক্তিবিদ্যার ভাষায় বলে ‘স্ট্রম্যান ফ্যালাসি’। সারা বিশ্বের রাজনীতিবিদদের কাছে এটা এক অতি প্রিয় অস্ত্র। আর বাংলাদেশের ক্ষমতাসীনদের এই অস্ত্র ব্যবহারের পরিমাণ বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্যায়েই থাকবে।
সংসদে অতি তাড়াহুড়োর মধ্য দিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য আইন পাস হয়ে গেছে। ৫০ বছরের বাংলাদেশে আর কেউ না করলেও বর্তমান সরকার আইনটি করেছে বলে বেশ বাহবা নিচ্ছে সরকার। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য একটা আইন তৈরি এবং সেটা নিয়ে আলোচনা বিশ্লেষণে আমাদের ব্যস্ত হয়ে পড়া একটি ‘স্ট্রম্যান ফ্যালাসি’। আমরা অনেকেই জেনে কিংবা না জেনে এই ফাঁদে পা দিয়েছিলাম।