নিজের লেন্সে ফারা
বিয়ে করে সংসারী হওয়ার সব প্রস্তুতি ছিল। কিন্তু জন্মসূত্রে পাওয়া গায়ের রংটা তাঁর বউ হওয়ার স্বপ্নটাকে চুরমার করে দিল। বিয়ের ঠিক আট মাস পূর্ণ হতেই হাতে এসে পৌঁছাল নীলচে রঙের তালাকনামা। আবার মা-বাবার কাছে ফিরে গেলেন ফারহানা ফারা। পরিবারের ছত্রচ্ছায়ায় শুরু হলো নতুন জীবনের জন্য সংগ্রাম। আবার পড়াশোনায় মন দিলেন ফারা। নিজের সঙ্গে প্রতিদিন যুদ্ধ করে কাঁদতে কাঁদতেই ফাইনাল পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে হয়েছিল। পরীক্ষার ফল প্রকাশের দিন পুরো পরিবার একসঙ্গে কেঁদেছিল। তবে সেটা ছিল আনন্দের কান্না। কারণ, ওই একটা বছরের মধ্যে এত চড়াই-উতরাই পেরিয়েও প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন ফারা।
এরপর শুরু হয় আরেক যুদ্ধ। যে যুদ্ধের নাম চাকরি খোঁজা। বলেন, ‘যখন যা পেতাম, তা-ই করতাম। কারণ, আমি নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাইতাম। ওই সময় বন্ধুরা অনেক সহযোগিতা করেছে। চট্টগ্রামে ২০১০ সালে অটবিতে প্রথম চাকরি শুরু করি। তখন প্রতিদিন চোখে কাজল দিয়ে যেতাম। আমি চাইতাম না সহকর্মীরা আমার কান্নায় ফুলে যাওয়া চোখ দেখুক। মজার ছলেই কেউ কেউ জিজ্ঞেস করত, আপা, মাসে কত কেজি কাজল লাগে আপনার। চট্টগ্রাম শহরটা ছোট, প্রতিদিনের যাওয়া-আসায় হঠাৎ হঠাৎ দেখা হয়ে যেত সাবেক স্বামী বা তাঁর পরিবারের কারও সঙ্গে। নিজেকে এই চাপ থেকে মুক্ত করতে ২০১৩ সালে আবার ঢাকায় ফিরে আসি। যোগ দিই নতুন কর্মস্থলে। একটু বিরতি নিয়ে ভর্তি হই মাস্টার্স অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে (এমবিএ)।’
- ট্যাগ:
- লাইফ
- নারী
- ফটোগ্রাফি
- জীবনের গল্প