কার্ড ‘জালিয়াতে’র ব্যাংক হিসাবে বিপুল লেনদেন
চাকরি করতেন মাত্র পাঁচ হাজার টাকা বেতনে। তবে নিজের ও স্ত্রীর স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যাংক হিসাব পাওয়া গেছে ১১টি। এসব ব্যাংক হিসাবে লেনদেন হয়েছে প্রায় ১ কোটি ৭৩ লাখ টাকা।
এই ব্যক্তির নাম মোহাম্মদ শরীফুল ইসলাম (৩২)। সুপারশপে কেনাকাটা করতে যাওয়া গ্রাহকদের তথ্য চুরি করে ব্যাংকের এটিএম কার্ড তৈরি ও টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে। এ অভিযোগে তাঁকে ২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল গ্রেপ্তার করা হয়। ঢাকার বনানী থানায় মামলা করা হয়।
তদন্ত শেষে সম্প্রতি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) যে প্রতিবেদন আদালতকে দিয়েছে, তাতে শরীফুলকে ব্যাংকের এটিএম ব্যবস্থায় লেনদেনের ক্ষেত্রে হুমকি হিসেবে উল্লেখ করা হয়। যদিও তিনি ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে পলাতক। গ্রেপ্তারের দুই মাসের মাথায় তিনি জামিন পান।
শরীফুলের বিরুদ্ধে বনানী থানায় করা অর্থ পাচার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সিআইডির পরিদর্শক মো. শাহিনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, শরীফুল একজন পেশাদার অপরাধী। এক যুগের বেশি সময় ধরে তিনি গ্রাহকের তথ্য চুরি করে হুবহু এটিএম কার্ড তৈরি করতেন। পরে সেই কার্ড দিয়ে গ্রাহকের টাকা তুলে নিয়ে তা নিজের ও স্ত্রীর ব্যাংক হিসাবে জমা রাখতেন।
সিআইডি জানিয়েছে, শরীফুল নিজের ও স্ত্রীর ব্যাংক হিসাবে যেমন টাকা রাখতেন, তেমনি কয়েকটি ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে ব্যাংক হিসাব খুলেও টাকা রেখেছেন। সব মিলিয়ে ১১টি ব্যাংক হিসাবে ২০১০ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত লেনদেন হয় প্রায় ১ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। সর্বশেষ ওই ব্যাংক হিসাবগুলোতে জমা ছিল সাড়ে ১০ লাখ টাকার মতো। শরীফুলের স্ত্রী শামীমা পেশায় গৃহিণী হলেও তাঁর নামে গাড়ি রয়েছে।
তদন্ত প্রতিবেদনে দেখা যায়, শরীফুল রাশিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। তিনি তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ। চার বছর আগে ঢাকার বনানীর একটি সুপারশপে তিনি পাঁচ হাজার টাকা বেতনে বিক্রয়কর্মীর চাকরি নেন। তবে তাঁর উদ্দেশ্য থাকত গ্রাহকের তথ্য চুরি। তাঁর হাতে থাকত ডিজিটাল ঘড়ি। ঘড়িতে সংযুক্ত করা ছিল বিশেষ কার্ড রিডার। গ্রাহক লেনদেনের সময় যখন কার্ডের পিন নম্বর দিতেন, তখন তা ঘড়িতে রেকর্ড হয়ে থাকত। পরে সেই পিন নম্বর দিয়ে বাসায় বসে এটিএম কার্ড তৈরি করতেন তিনি।