দোষারোপের রাজনীতি ও গণতন্ত্র
গণতান্ত্রিক অধিকার, গণতন্ত্র, আইনের শাসন, আইনের চোখে সকল নাগরিকই সমান, বাক স্বাধীনতা, সংগঠন গড়ার স্বাধীনতা, মানুষে মানুষে বিরাজমান ধর্মীয় ও অর্থনৈতিক বৈষম্য দূরীকরণ এগুলি চাইলেও পরাধীন ভারত বর্ষে, বৃটিশ শাসকদের শাসনাধীন ভারতবর্ষে তা পাওয়া যায় নি,পাওয়ার কথাও ছিল না কারণ এগুলি প্রতিষ্ঠার পূর্বশর্তই হলো দেশের আমলে আদৌ ভারতবর্ষে ছিল না।কিন্তু আন্দোলনকারী তৎকালীন দলগুলি ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা ঐ বিষয়গুলির প্রতি জাগ্রত ছিল।
ইংরেজরা এই দাবীতে প্রমাদ গনেছে।তারা ঠিকই বুঝে নিতে পেরেছিলো যে ঐ দাবীগুলি মেনে নিলে ভারতবর্ষ তাদের শাসন শোষণাধীনে থাকবে না। তাই তারা শুরু করে রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদেরকে নিপীড়ন নির্যাতন ও নানাবিধ জুলুম ও অত্যাচার। এই নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনেরও যখন জনগণের আকাংখা অর্জিত হচ্ছিল না-তখন সশস্ত্র বিপ্লবীরা সংগঠিত হতে থাকেন। লক্ষ্য, একের পর এক বৃটিশ শাসক এবং তাদের দালানদের গোপনে হত্যা করে ইংরেজদেরকে ভারতবর্ষ ত্যাগ করতে বাধ্য করা। একে একে গঠিত হতে থাকলো মুক্তিকামী সশস্ত্র বাহিনী-যাদের একটির নাম ছিল যুগান্তর ও অপরটির নাম অনুশীলন। এঁরা কিছু কিছু ইংরেজ কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাদের দালালদের হত্যা করে তাদের কাছ থেকে আরও হত্যার উদ্দেশ্যে অস্ত্র সংগ্রহ করতে থাকে। এভাবে তাঁরা অস্ত্র সমৃদ্ধ হন এবং এক পর্যায়ে চট্টগ্রামে বিদ্রোহের মধ্য দিয়ে ওখানকার পুলিশের অস্ত্রাগারও লুঠ করে ইংরেজ হত্যা চালানোর লক্ষ্যে অগ্রসর হতে নিয়ে বিপ্লবীরা ধরা পড়ে যান এবং তাঁদের কাউকে কাউকে ফাঁসিতে লটকানো হয় এবং অনেককে দ্বীপান্তরে পাঠিয়ে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়। ভীত সন্ত্রস্ত ইংরেজরা এতেও তৃপ্ত না হয়ে দ্বীপাান্তরে প্রচুর মার্কসীয় বই পত্র পাঠান যাতে ওগুলি পড়ে বিপ্লবীরা সন্ত্রাসবাদের পথ পরিসর করে।