খাদ্যব্যবস্থার ভবিষ্যৎ ভিত
প্রতিবাদী শিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের একটি গান আছে 'টুইডাল ডি এবং টুইডাল ডাম'। গানটি অসম রাষ্ট্র ও খাদ্যব্যবস্থার রাজনীতি সামনে তুলে ধরে রাখঢাকহীন কায়দায়। এই গানে একবার রাজা 'টুইডাল-ডি' থেকে 'টুইডাল-ডাম' এবং আরেকবার 'টুইডাল-ডাম' থেকে 'টুইডাল-ডি' হয়। রাজার নাম বদলায়, কিন্তু শাসন ও বৈষম্যের রূপ একই থেকে যায়। এই বৈষম্যমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা জনগণের মৌলিক অধিকার 'খাদ্যের' সুরক্ষার কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেয় না। খাদ্য নিরাপত্তা কি খাদ্য সার্বভৌমত্ব, স্লোগান হিসেবে মুখর হলেও আমরা দেখতে পাই খাদ্য আজ নিদারুণভাবে করপোরেট বাণিজ্যের এক অব্যর্থ মারণাস্ত্র। খাদ্য নিরাপত্তা এখনও পর্যন্ত একটি সর্বজনগ্রাহ্য ধারণা নয়। একটি দেশের খাদ্য উৎপাদনের পরিসংখ্যানকেই কেবল খাদ্য নিরাপত্তা বোঝায় না। বিশ্ব খাদ্য উৎপাদন, বাণিজ্যনীতি, বাণিজ্য সম্পর্কিত চুক্তি, কৃষি সম্পর্কিত আইন ও নীতি, আয়-সংক্রান্ত ধারা এবং সামাজিক নিরাপত্তা- সবই খাদ্য নিরাপত্তার সঙ্গে সম্পর্কিত। বাংলাদেশের মতো এক গরিব শ্রেণিবিভাজিত রাষ্ট্রের জন্য খাদ্য নিরাপত্তা আরও বহুপক্ষীয় এবং বহুমাত্রিক ব্যাখ্যার বিষয়। এখনও পর্যন্ত বাংলাদেশে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের একমাত্র রাষ্ট্রীয় কর্মসূচি ও দর্শন 'অধিক খাদ্য উৎপাদন'। এই অধিক খাদ্য উৎপাদন কৌশল মূলত খাদ্য সুরক্ষার প্রশ্নকে সামাল দেওয়ার চাইতে উস্কে দিয়েছে বহুজাতিক কোম্পানির সার-বিষ ও সংহারী বীজের একতরফা বাণিজ্যকে।