নতুন রূপে আত্মঘাতী বাঙালি
বর্তমান প্রজন্মের সঙ্গে নীরোদ সি চৌধুরীর পরিচয় না-ও থাকতে পারে। কারণ এই প্রজন্মের বেশির ভাগ তরুণই পরীক্ষা পাসের জন্য পড়ালেখা করে, জ্ঞান অর্জনের জন্য নয়। ব্যতিক্রম তো কিছু আছে। কোনো এক তরুণকে কোনো একটি বিষয়ে প্রশ্ন করলে সাধারণত উত্তর আসে ‘পড়েছিলাম স্যার, এখন মনে নাই।’ মনে হয় বর্তমান প্রজন্মের কাছে একটি ডিলিট বাটন আছে। পরীক্ষা শেষ তারপর ডিলিট বাটন টিপ দিলেই সব কিছু মুছে যায়। নীরোদ সি চৌধুরীর জন্ম বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জে। পড়ালেখা করেছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, স্কটিশ চার্চ কলেজ আর সুরেন্দ্রনাথ কলেজে। তাঁর ভালো লাগার মধ্যে অন্যতম ছিল পাশ্চাত্য জীবনধারা, যদিও তিনি ৫৭ বছর বয়সের আগে বিলাত যাওয়ার সুযোগ পাননি। তিনি অসংখ্য বই লিখেছেন, যার মধ্যে অন্যতম ছিল ‘আত্মঘাতী বাঙালি’। তিনি সেখানে রবীন্দ্রনাথের ‘আজি হতে শতবর্ষ আগে’ কবিতা প্রসঙ্গে আলোচনা করতে গিয়ে লিখেছিলেন আজ থেকে শতবর্ষ পরে জানার আগে জানা উচিত আজ থেকে শতবর্ষ আগে বাঙালি কেমন ছিল। বলা বাহুল্য, তিনি বলতে চেয়েছেন আজ থেকে শতবর্ষ আগে বাঙালি অনেক উন্নত ছিল। শতবর্ষ পর বাঙালির যে দৈন্যদশা হবে তার জন্য বাঙালি নিজেকেই দায়ী করতে হবে। নীরোদ সি চৌধুরী বেঁচে ছিলেন প্রায় ১০২ বছর। বসতি গেড়েছিলেন অক্সফোর্ডে। শেষ জীবন পর্যন্ত লিখে গেছেন। ১৯৯২ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে সম্মানসূচক ডি.লিট উপাধিতে ভূষিত করে।