কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

ঢাকার হাসপাতালেও রোগী বাড়ছে

মানবজমিন প্রকাশিত: ২৫ জুন ২০২১, ০০:০০

সারা দেশের মতো রাজধানীর হাসপাতালগুলোতেও বাড়ছে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। হাসপাতালে বেড়েছে ভিড়। বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র। হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন , এপ্রিলের শেষদিকে করোনার সংক্রমণ কমে আসলেও জুনের শুরু থেকে রোগীদের চাপ বেড়েছে। ১০ দিন ধরে মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ছুটছেন। তীব্র শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন লক্ষণ নিয়ে হাসপাতালে আসা রোগীদের বেশির ভাগের করোনা শনাক্ত হচ্ছে। সাধারণ বেড ও আইসিইউতে বাড়ছে রোগীর চাপ। ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের আক্রান্তের কারণে আইসিইউর চাহিদা বেশি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা সংক্রমণ রোধে সরকারের দেয়া বিধিনিষেধেও স্বাস্থ্যবিধি রক্ষা হয়নি। এতে সংক্রমণ দ্রুত গতিতে ছড়িয়েছে। এখন যেসব মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন, তাদের বেশির ভাগই ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত। আগে মানুষ করোনায় আক্রান্ত হলেও হাসপাতালে আসতে চাইতেন না। এখন ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের কারণে রোগীদের তীব্র শ্বাসকষ্ট দেখা দিয়েছে। এতে মানুষ হাসপাতালে ছুটেছে। গত কয়েকদিনের আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার ঊর্ধ্বগতি। এদিকে রাজধানীর কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতালে ফের বেড়েছে করোনায় আক্রান্ত রোগীর চাপ। প্রতিদিন প্রায় ৭০ জনের মতো রোগী আসছেন হাসপাতালে। গত মাসের শেষ দিনেও যার সংখ্যা ছিল ২০- এর ঘরে। গত কয়েক দিনের ব্যবধানে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় আড়াইগুণ। বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত হাসপাতালটিতে ৮০ জনের মতো রোগী ভর্তি রয়েছেন। যার মধ্যে ১০ জন রয়েছেন আইসিইউতে। গত ২৩ দিনে হাসপাতালটিতে ভর্তি হওয়া ১৫ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দেখা যায়, করোনা রোগীদের জন্য সাধারণ বেড রয়েছে ৩৩০টি। এর মধ্যে রোগী ভর্তি আছেন ৯৮ জন। আইসিইউতে ভর্তি আছেন আরও ২৪ জন। তবে সব মিলিয়ে গতকাল দুপুর পর্যন্ত হাসপাতালটিতে ভর্তি রয়েছেন ১২২ জন। যেখানে এক মাস আগেও রোগীর সংখ্যা ছিল ৫০-এর নিচে। গত ২৩ দিনে রোগী বেড়েছে ২ দশমিক ৫ শতাংশ। আগে আইসিইউতে ১ থেকে ২ জন ভর্তি থাকলেও বর্তমানে রোগীর চাপ বেশি থাকায় আইসিইউর কোনো বেড খালি নেই। এ নিয়ে শঙ্কিত হাসপাতালের কর্মকর্তারাও। তারা বলছেন, গত কয়েকদিন ধাপে ধাপে করোনা রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। এতে সাধারণ বেড খালি থাকলেও নতুন কোনো মুমূর্ষু রোগীর জন্য আইসিইউ খালি নেই। চলতি মাসের শুরুতে প্রতিদিন গড়ে ৬০ জনের মতো করোনা রোগী চিকিৎসা নিতেন এই হাসপাতালে। গত এক সপ্তাহ ধরে ১২০ এরও বেশি রোগী ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। গতকাল একদিনে ভর্তি হয়েছেন আরও ১৮ জন। এ ছাড়া নমুনা পরীক্ষার সংখ্যাও বেড়েছে। গড়ে প্রতিদিন ১০০ রোগীর নমুনা শনাক্ত করা হচ্ছে। করোনায় আক্রান্ত রোগী বেড়েছে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালেও। হাসপাতালটির ২৭৫টি সাধারণ বেডের মধ্যে খালি আছে মাত্র ২৯টি। আইসিইউ ১০টি বেডের মধ্যে খালি নেই একটিও। গত এক সপ্তাহে রোগী বেড়েছে প্রায় ৩ গুণ। প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ জন রোগী ভর্তি হচ্ছেন। শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১০০ জন রোগী। এর মধ্যে আইসিইউতে ভর্তি আছেন ১০ জন। রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১১৬ জন। জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৬৩ জন। একইভাবে রাজধানীর প্রতিটি হাসপাতালে করোনা রোগীর চাপ বেড়েছে। এসব হাসপাতালে ১০ দিন আগেও অর্ধেকের কম রোগী ভর্তি ছিল। মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত বড় ভাইকে ভর্তি করতে এসেছিলেন বনশ্রী এলাকার দিনমজুর হুমায়ুন কবির। তিনি জানান, ৪ দিন আগে তার বড় ভাই হেলাল উদ্দিনের করোনা শনাক্ত হয়। বাসায় রেখে ৪ দিন চিকিৎসা দেয়া হয়। বুধবার রাত থেকে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। এতে পরিবারের সবাই দুশ্চিন্তায় পড়েন। পরে সকালে মুগদা হাসপাতালের সাধারণ বেডে ভর্তি করা হয়। তখনো কমেনি শ্বাসকষ্ট। আইসিইউ বেডের প্রয়োজন হলেও হাসপাতালের আইসিইউতে কোনো বেড খালি না থাকায় সেখানে নিতে পারছেন না। মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. অসীম কুমার নাথ মানবজমিনকে বলেন, মাসের শুরু থেকে করোনা রোগীর সংখ্যা তুলনামূলক কয়েক গুণ বেড়েছে। প্রতিদিনই নতুন রোগী ভর্তি হচ্ছেন। একমাস আগেও হাসপাতালে রোগীদের তেমন একটা চাপ ছিল না। এখন প্রতিদিন গড়ে ১৫ থেকে ২০ জন করে করোনা রোগী ভর্তি হচ্ছেন। আমাদের হাসপাতালের ২৪টি আইসিইউ (ইনসেনটিভ কেয়ার ইউনিট) বেডে ২৪ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। নতুন রোগী আসলে সাধারণ বেড ছাড়া আর কোনো সুযোগ নেই। ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হওয়ার কারণে প্রতিদিনই কমবেশি রোগীর মৃত্যু হচ্ছে। বৃহস্পতিবারও হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এভাবে চলতে থাকলে পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটবে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে