পুঁজিবাদের অধীনস্ত অবস্থাতে আমরা জাতীয়তাবাদের তৎপরতা দেখছি। জাতীয়তাবাদের একটা প্রগতিশীল ভূমিকা থাকে, যখন সে পুঁজিবাদ-সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী হয়। ওই ভূমিকাটা এক সময়ে শক্তিশালী ছিল। অধিকৃত দেশের মানুষ জাতীয় মুক্তির জন্য সংগ্রাম করত। কিন্তু এখন জাতীয়তাবাদ নিজেই দখলে চলে গেছে পুঁজিবাদের। ফলে জাতীয়তাবাদ অস্ত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে উগ্রতা সৃষ্টি করে রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে দুর্বল জনগোষ্ঠীর ওপর দমন-পীড়নের এবং বহিঃশত্রু ওঁৎ পেতে বসে রয়েছে দেখিয়ে সামরিক শক্তি বৃদ্ধির, বিশেষ ভাবে অস্ত্র ক্রয়-বিক্রয়ের মাধ্যমে ধনীদের আরও ধনী করবার। অভ্যন্তরীণ উগ্রতা বৃদ্ধির জন্য দুঃসহ ব্যবহার চলছে নানা ধরনের বিদ্বেষের বর্ণের, ধর্মের, ভাষার। এমনকি নারী-পুরুষের পার্থক্যেরও। রাষ্ট্রক্ষমতা দখলে রাখাই এই সব জাতীয়তাবাদীদের উদ্দেশ্য; আর সেটা জনগণের স্বার্থে নয় নিজেদের স্বার্থে। রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে মূল সমস্যাটা আগের মতোই রয়ে যায়। সেটি শ্রেণি-সম্পর্কের। শ্রেণি-সমস্যাকে ঢেকে রেখে তথাকথিত জাতীয় সমস্যাকে সামনে নিয়ে আসা হয়, এবং ওই অন্ধকারে মেহনতি মানুষদের ওপর জুলুম চলতে থাকে। বড় রাষ্ট্র আমেরিকা ও ভারত; সেখানে রাষ্ট্রক্ষমতায় যারা আছেন কোনো বিবেচনাতেই তারা সমাজের শ্রেষ্ঠ মানুষ নন, বরং নিচু পর্যায়েরই লোক। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন ‘আমেরিকাই প্রথম’। তার কাছে আমেরিকা অর্থ শ্বেতবর্ণের লোক, যারা নিজেরাই বহিরাগত। উগ্র জাতীয়তাবাদের সেই আওয়াজ তুলে অন্য বর্ণের মানুষের প্রতি বিদ্বেষ সৃষ্টির তৎপরতা চলছে। মূল শত্রু যে পুঁজিবাদ, আড়ালে বসে সে হাসে। একই ঘটনা ভারতেও। সেখানে প্রধানমন্ত্রী মোদি ও তার দল বহুজাতির দেশটিকে হিন্দুর দেশে পরিণত করতে তৎপর। হিন্দুত্ববাদের হুজুগ তুলে শ্রেণিগত নিপীড়নকে সাম্প্রদায়িক সম্পর্কের নিচে চাপা দিয়ে রাখাটাই অভিসন্ধি। রাশিয়া বেশ আগেই জাতীয়তাবাদী হয়ে গিয়েছে। রাশিয়ার একদা-সমালোচক চীনও এখন একই পথে ধাবমান। অন্য রাষ্ট্রগুলোর একই দশা। এই জাতীয়তাবাদীরা মোটেই দেশপ্রেমিক নয়; দেশ বলতে যে কেবল ভূগোল বোঝায় না, তার চেয়ে অনেক বেশি করে দেশের মানুষ বোঝায় সেই সত্যটাকে এরা মুখে যাই বলুক ভেতরে মোটেই মান্য করে না। দেশের মানুষকেও সেটা বুঝতে দেয় না। ফলে মানুষ কষ্টে থাকে, দেশের নাম করে দেশের শাসকরা ক্ষমতা কুক্ষিগত রাখার কাজটা মহোৎসাহে চালিয়ে যায়।
You have reached your daily news limit
Please log in to continue
উদারনীতিও পুঁজিবাদের অবসান চায় না
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন